এজেন্সি
জালালুদ্দিন মুহাম্মাদ রুমি

জালালুদ্দিন মুহাম্মাদ রুমি

জালালুদ্দিন মুহাম্মাদ রুমি

জালালুদ্দিন রুমি : মধ্যযুগের ফারসি সাহিত্য পৃথিবীকে দিয়েছিল একঝাঁক সূর্যসম প্রতিভা। অতুলনীয় সৃষ্টির প্রাচুর্যে এরা ভরে দিয়েছেন সাহিত্যের অঙ্গন। এদের অন্যতম মহাকবি জালালুদ্দিন রুমি।

জালালুদ্দিন রুমি ১২০৭ সালের বর্তমান আফগানিস্তানের বালখে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতা বাহা ওয়ালাদ একজন মহান ধর্ম প্রচারক ও শায়খ ছিলেন। ১২৩১ সালে বাহা ওয়ালাদ-এর মৃত্যুর সময়ের মধ্যে রুমি কোনিয়ায় শিক্ষা দান ও ধর্ম প্রচারণার কাজে নিয়োজিত ছিলেন। তাঁর পাণ্ডিত্য ও বাগ্মিতা বহু লোককে তাঁর সান্নিধ্যে নিয়ে আসে এবং খুব শিগগিরই তিনি নগরীতে সবচেয়ে পরিচিত শায়খের একজনে পরিণত হন, যদিও তখন তাঁর বয়স মাত্র বিশ পেরিয়েছে।

১২৪৪ সালের ১১ই অক্টোবর তাবরিজের শামস আদ-দীন কোনিয়ায় আসেন। তাঁর সঙ্গে রুমির দেখা হয়। তখন শামস-এর বয়স ষাট বছর এবং রুমির সাঁইত্রিশ। শামস তাবরিজির সঙ্গে দেখা হবার আগে পর্যন্ত রুমি ছিলেন একজন ধর্মগুরু ও পীর। তাবরিজি তাঁকে নিয়ে গেলেন অন্য এক জগতে- প্রেম ও ভালোবাসায়। তাবরিজি তাঁকে দেখালেন,গতানুগতিক জ্ঞান ও বিদ্যাচর্চাই শেষ কথা নয়। এর বাইরেও আছে আরো অনেক গুরুত্বপূর্ণ বিদ্যা যা তাঁর অনায়ত্ত। সেই বিদ্যা আয়ত্ত করতেই পণ্ডিত জালালুদ্দিন রুমি নিজেকে উজাড় করে দিলেন। এখান থেকেই তাঁর অন্যতম দর্শন হলো,প্রেম ও ভালোবাসা। তিনি নতুন করে শিখলেন সৃষ্টিকর্তাকে ভালোবাসা,বিশ্বের প্রতিটি অণু-পরমাণু ও মানুষকে ভালোবাসার পন্থা। ১৭ ডিসেম্বর সূর্যাস্তের সময় যখন মারা গেলেন তখন সব ধর্ম ও মতের মানুষ দাফন বা শেষকৃত্য অনুষ্ঠানে যোগ দেয়। শাসক থেকে শুরু করে রাস্তার ফকির পর্যন্ত সবাই ছুটে আসে কবিকে শেষ এক নজর দেখার আশায়। ইহুদি ও খ্রিস্টানরা দাফন অনুষ্ঠানে এসে তাঁদের পবিত্র ধর্মগ্রন্থ থেকে আবৃত্তি আরম্ভ করেন। এতে প্রমাণ হয়,রুমি ঊর্ধ্বে উঠতে পেরেছিলেন সকল সংকীর্ণতার। নিজ বিশ্বাসে অবিচল থেকেও সব ধরনের মত-পথ ও ধর্মীয় চেতনার ঊর্ধ্বে ওঠা- নিঃসন্দেহে খুবই কঠিন কাজ। কিন্তু রুমি নিজের জীবনে সেই অসাধ্য সাধন করেছিলেন।

জালালুদ্দিন রুমি পাশ্চাত্যের পাঠকদের কাছে এতো জনপ্রিয় ও খ্যাতির অধিকারী হয়ে উঠেছেন যে, তাঁকে সেখানে নতুন করে পরিচয় করিয়ে দেয়ার প্রয়োজন পড়ে না। রুমির দীর্ঘতম কাজ তাঁর ২৫,০০০ লাইনবিশিষ্ট ছয় খণ্ডের আধ্যাত্মিক মহাকাব্য ‘মসনভী’ নয়; বরং তাঁর ৪০,০০০ লাইনের কবিতা সংকলন, তাঁর সংক্ষিপ্ত  প্রেমের কবিতা, যা ‘দিওয়ান-ই শামস-ই তাবরিজি’ নামে পরিচিত।

রুমির পাণ্ডিত্যপূর্ণ সাহিত্যের মধ্যে ‘উপদেশাবলি’ বা ‘সংলাপ’ এর অস্তিত্ব দীর্ঘদিন থেকে স্বীকৃত।

জালালুদ্দিন মুহাম্মাদ রুমি
মৌলভী রুমি
মসনভী, দিওয়ান-ই শামস-ই তাবরিজি

ইসলামিক কালচার অ্যান্ড কমিউনিকেশন অর্গানাইজেশন হল ইরানি সংস্থাগুলির মধ্যে একটি যেটি সংস্কৃতি ও ইসলামিক গাইডেন্স মন্ত্রণালয়ের সাথে অধিভুক্ত; এবং 1995 সালে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল।[আরও]

:

:

:

: