খাজা নাসির আল-দীন তুসি
তিনি একজন বিশিষ্ট ইরানি কবি, দার্শনিক, ধর্মতত্ত্ববিদ, আইনবিদ, জ্যোতির্বিজ্ঞানী, চিন্তাবিদ, গণিতবিদ, চিকিৎসক, স্থপতি ও রাজনীতিবিদ। ‘নাসির আল-দীন’,‘মোহাক্কেক তুসি’,‘ওস্তাদ আল-বাশার’ এবং ‘খাজা’ নামেও তিনি প্রসিদ্ধ। তিনি ১২০১ খ্রিস্টাব্দের ১৮ ফেব্রুয়ারি ইরানের তুস নগরীতে জন্মগ্রহণ করেন।
তিনি বিভিন্ন বিজ্ঞান অধ্যয়নের প্রতি অত্যন্ত আগ্রহী ছিলেন এবং অল্প বয়স থেকেই গণিত, জ্যোতির্বিদ্যা ও দর্শনে পারদর্শিতা অর্জন করেছিলেন এবং তাঁর সময়ের বিখ্যাত বিজ্ঞানীদের একজন হয়ে উঠেছিলেন। খাজা নাসির আল-দীন আল-তুসি ছিলেন মঙ্গোলদের অন্ধকার দিগন্তে জ্বলজ্বল করা এক উজ্জ্বল নক্ষত্র।
মারাগেহ মানমন্দিরটি খাজা নাসির আল-দীন তুসির আদেশে এবং তাঁর তত্ত্বাবধানে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল, যা একটি বিস্তৃত বৈজ্ঞানিক গবেষণা ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের অনুরূপ এবং এতে 4 লক্ষ বইয়ের একটি লাইব্রেরি এবং জ্যোতির্বিদ্যা যন্ত্রের সংগ্রহ ছিল, যেখানে তিনি প্রতিটি বিভাগের প্রধান হিসাবে সেই সময়ের সবচেয়ে বিখ্যাত বিজ্ঞানীদেরকে নিয়োগ করেছিলেন তাঁদের জাতীয়তা ও ধর্ম বিবেচনা ছাড়াই। UNESCO ২০০৮ সালকে মারাগেহ মানমন্দিরের বছর হিসাবে মনোনীত করেছে এবং এই মানমন্দিরটিকে UNESCO এর স্পৃশ্য ঐতিহ্যের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করার জন্য পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।
খাজা নাসির আল-দীন আল-তুসির কয়েকটি বিখ্যাত বই হলো ইবনে সিনার এশারাত গ্রন্থের ভাষ্য , ‘তাজরিদ আল-ইতিকাদ’, ‘আল-তাজকিরাহ আল-নাসিরিয়া’, ‘আখলাক-ই নাসেরি’, ‘জাওহর আল-ফারাইজ’, জ্যোতির্বিদ্যার বই, ‘যুক্তিবিদ্যার নীত’ ইত্যাদি। খাজার লেখা ১৬৫২ খ্রিস্টাব্দে লন্ডনে ল্যাটিন ভাষায় প্রকাশিত হয়েছিল এবং তাঁর কিছু রচনা মিশর,ভারত ও ইরানেও প্রকাশিত হয়েছে।
খাজা নাসির আল-দীন তুসি ১২৭৪ খ্রিস্টাব্দের ২৬ জুন বাগদাদে মারা যান এবং তাঁর দেহ কাদিমিয়াতে স্থানান্তরিত করা হয় এবং দুই মাসুম শিয়া ইমামের সমাধির পাশে সমাহিত করা হয়।
খাজা নাসির আল-দীন তুসি | |
ইবনে সিনার এশারাত গ্রন্থের ভাষ্য , ‘তাজরিদ আল-ইতিকাদ’, ‘আল-তাজকিরাহ আল-নাসিরিয়া’, ‘আখলাক-ই নাসেরি’, ‘জাওহর আল-ফারাইজ’, জ্যোতির্বিদ্যার বই, ‘যুক্তিবিদ্যার নীত’ |