এজেন্সি
আমীর কবীর

আমীর কবীর

আমীর কবীর

মীর্যা তাকি খান-এ ফারাহানি, যিনি আমীর কবীর নামে সমধিক পরিচিত, তিনি ১৮০৭ সালে ইরানের আরাক প্রদেশের হাযাভে গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ছিলেন কাজার বাদশাহ নাসিরুদ্দিন শাহের সময়কালে ইরানের প্রধানমন্ত্রী।

ইরানের অভ্যন্তরীণ সংস্কার সাধনের লক্ষ্যে দেশের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালনের স্বল্প সময়ে (তিন বছরের কিছু বেশি সময়) আমীর কবির যে প্রশংসনীয় উদ্যোগ নিয়েছিলেন এবং বাস্তবায়িত করেছিলেন সেগুলোর মধ্যে ছিল সংস্কৃতিকে উন্নত করা,অর্থনীতির নিয়ন্ত্রণ,দারিদ্র্য দূরীকরণ,দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনকে পরিশুদ্ধ করা, ধর্মকে পুনরুজ্জীবিত করা এবং সমাজে ন্যায়বিচার সম্প্রসারণের পদক্ষেপ নেওয়া, বিদেশী ও ঔপনিবেশিক শক্তির প্রভাব ছিন্ন করা এবং দেশের স্বাধীনতা ও আঞ্চলিক অখণ্ডতা রক্ষা করা।

উল্লিখিত সংস্কারের ব্যাপারে আমির কবিরের কিছু পদক্ষেপের মধ্যে রয়েছে: দারুল ফুনুন প্রতিষ্ঠা, নতুন বিজ্ঞানের প্রসার,নতুন শিল্পের প্রসার,ইরানিদেরকে উচ্চশিক্ষার জন্য বিদেশে প্রেরণ এবং তাদের প্রত্যাবর্তনের পর ইরানে শিক্ষকতায় নিয়োগ করা, বৈজ্ঞানিক বইয়ের অনুবাদ ও প্রকাশনার ক্ষেত্রে পৃষ্ঠপোষকতা দান,সংবাদপত্র চালু করা,দুর্নীতির বিরুদ্ধে যুদ্ধ করা (যা একটি দীর্ঘস্থায়ী রোগ হিসাবে ইরানের জনজীবনের সমস্ত অঙ্গনে অনুপ্রবেশ করেছিল), দেশের অর্থনৈতিক ভিত্তিকে শক্তিশালী করা, খনিজ সম্পদ অনুসন্ধানের কাজ সম্প্রসারণ, কৃষি ও সেচের সম্প্রসারণ, দেশীয় ও বৈদেশিক বাণিজ্যের প্রসার ঘটানো,দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়গুলো থেকে বিদেশী হস্তক্ষেপকে প্রতিহত করা,দেশের জন্য রাজনৈতিক বৈদেশিক নীতিকে সংজ্ঞায়িত করা,অর্থসংশ্লিষ্ট বিষয়াবলিকে উন্নত করা এবং দেশের বার্ষিক বাজেটে ভারসাম্য আনয়ন,নিরাপত্তা সৃষ্টি,ইরানের সশস্ত্র বাহিনীকে সংগঠিত করা,অস্ত্র কারখানা স্থাপন,বিচারিক বিষয়ের সংস্কার,ছাপাখানা প্রতিষ্ঠা,হাসপাতাল প্রতিষ্ঠা ইত্যাদি।

ঔপনিবেশিকতার বিরুদ্ধে সংগ্রামের অগ্রনায়ক আমীর কবীরের বিপ্লবী ও জাতীয়তাবাদী পদক্ষেপের কারণে দুর্নীতিবাজরা তাঁর বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র শুরু করে এবং অবশেষে কাজার শাসক নাসিরুদ্দিন শাহ তাঁকে দেশের প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে বরখাস্ত করে। পরে তাঁকে হত্যাও করা হয়। আমীর কবীর ১৮৫২ সালের ৯ জানুয়ারি কাশান শহরের ফিন বাথহাউসে শহীদ হন। ইরানে তাঁর নামে অসংখ্য স্থান এবং শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান রয়েছে।

আমীর কবীর

:

:

:

: