চাভোশখানি
চাভোশখানি হলো হজযাত্রী ও মাযার যিয়ারতকারীদের শুভেচ্ছা জানাতে বিশেষ আচরণের মাধ্যমে কবিতা পাঠের রীতি। এই ধরনের কবিতাকে বলা হয় চাভোশি এবং যে ব্যক্তি এগুলো গেয়ে থাকেন তাঁকে বলা হয় চাভোশ বা চাভোশখন। হজ মৌসুমের বিশেষ দিনগুলোতে বা ইরাকে ইমাম হুসাইন (আ.)-এর মাযার এবং ইরানে ইমাম রেযা (আ.)-এর মাযার যিয়ারতের সময় চাভোশ পাঠকারীরা ইরানের শহর ও গ্রামে যান এবং বিশেষ রীতিনীতি ও ঐতিহ্যের সাথে কাফেলার যাত্রা ও গতিবিধি সম্পর্কে মানুষকে অবহিত করেন। তাঁরা মানুষকে হজ ও যিয়ারতে যেতে উৎসাহিত করেন। চাভোশ তীর্থযাত্রার পুরো পথ জুড়ে তীর্থযাত্রীদের সামনে চলেন এবং তিনি ভ্রমণের পরিকল্পনা করা এবং পুরো যাত্রা জুড়ে কাফেলার যত্ন নেওয়ার জন্য দায়িত্বশীল। তিনি সাধারণত একটি সবুজ ত্রিভুজাকার পতাকা বহন করেন যেটাকে মাযারের ছবি এবং উপযুক্ত স্লোগান দিয়ে সজ্জিত করা হয়। চাভোশ উন্মুক্ত স্থানে পতাকা স্থাপন করে বা কাঁধে বহন করে কবিতা আবৃত্তির মাধ্যমে মানুষকে তীর্থযাত্রায় আমন্ত্রণ জানান। যদি তিনি নবিবংশের তথা সাইয়্যেদ হন তবে তাঁর গলায় সবুজ কাপড়ের একটি টুকরো জড়িয়ে রাখেন,আর সাইয়্যেদ না হলে নিজের গায়ে একটি কালো শাল জড়িয়ে রাখেন। একটি ভালো কণ্ঠের পাশাপাশি চাভোশকে অবশ্যই শক্তিশালী স্মৃতিশক্তির অধিকারী হতে হয়। তাঁকে তীর্থযাত্রা ও প্রার্থনার আচারগুলো সম্পর্কে জানতে হয়, রাস্তা-ঘাট চিনতে হয় এবং মাযারগুলো সম্পর্কেও জানতে হয়।
তীর্থযাত্রা শেষ হওয়ার পর তাঁকে অন্য তীর্থযাত্রীদের আগে তাঁদের জায়গায় ফিরে যেতে হয় যাতে হজযাত্রীদের পরিবারকে তাদের প্রত্যাবর্তন সময় জানানো পারেন। সাধারণত তীর্থযাত্রীদের আগমনের খবর শুনে তাদের পরিবার চাভোশের জন্য কিছু উপহারও পাঠায়।
চাভোশখানি | |