ইমামজাদেহ সালেহ এর মাজার, তেহরান
ইমাম মূসা আল-কাযিম (আ.)-এর পুত্র হযরত সালেহর সমাধিভবনের প্রাথমিক নির্মাণকাজ সম্পন্ন হয় পঞ্চম হিজরি শতাব্দীতে (১২০০ খ্রি.)। সমাধিক্ষেত্রটি তেহরানের উত্তরে শেমিরান জেলার তাজরিশ স্কোয়ারে অবস্থিত। সাফাভি ও কাজার যুগে সমাধিটি সংস্কার এবং কিছু অংশ প্রাথমিক ভবনে যুক্ত করা হয়েছিল।
তিন হাজার বর্গমিটার এলাকা জুড়ে অবস্থিত এই সমাধিতে একটি প্রাঙ্গণ,কয়েকটি বারান্দা,একটি মসজিদ, একটি গম্বুজ এবং একটি অপেক্ষাকৃত ছোট প্রাঙ্গণ রয়েছে যা একসময় একটি গণকবরস্থান ছিল। মূল ভবনের নিচতলায় একটি সমাধিকক্ষ রয়েছে,যেখানে মূল কবরটি অবস্থিত। কথিত আছে যে, এই ইমামজাদার মাথা এই সমাধিতে দাফন করা হয়েছে এবং তাঁর মৃতদেহ আরদাবিল শহরে একই নামের একটি সমাধিতে সমাহিত করা হয়েছে।
ইরানের সবচেয়ে বিখ্যাত প্রাচীন সিকামোর (ডুমুর গাছবিশেষ) গাছগুলোর মধ্যে একটি গাছ,যেটির বয়স অন্তত আটশ বছর,সেটি কয়েক বছর আগ পর্যন্ত এই সমাধির প্রাঙ্গণে বিদ্যমান ছিল;যা সম্পর্কে বিদেশী পর্যটকদের স্মৃতিচারণায় উল্লেখ করা হয়েছে।
ইমামজাদেহ সালেহ-এর সমাধি হলো ইরানের অনেক বিখ্যাত ও বিশিষ্ট ব্যক্তিত্বের সমাধিস্থল। বর্তমানে এই সমাধিটিতে একটি মাত্র কবরস্থান রয়েছে,যেটি সমাধির বেসমেন্টে অবস্থিত এবং একে মাসুমিয়া বারান্দা বলা হয়। ইরানের উপর চাপিয়ে দেওয়া যুদ্ধের (ইরাকি বাথিস্ট শাসন দ্বারা) পাঁচজন অজানা সৈন্যের মৃতদেহ এবং একজন নিহত ইরানি পরমাণু বিজ্ঞানী মাজিদ শাহরিয়ারিকেও এই সমাধির আঙ্গিনায় সমাহিত করা হয়েছে।
এই সমাধিতে প্রতিদিন অনেক তীর্থযাত্রী আগমন করে এবং প্রতি বছর ইমামজাদেহ সালেহের সম্মানে একটি স্মরণ অনুষ্ঠান ইসলামি ক্যালেন্ডারের ১১তম মাস যিলকদ এর ৫ তারিখে অনুষ্ঠিত হয় যা তাঁর জন্মদিন। বলা হয়ে থাকে যে, সুদূর অতীতে যখন শীতকালে তুষারপাতের কারণে তাজরিশে যাওয়ার পথ অতিক্রম করা কঠিন হয়ে যেত তখন এই সমাধির তীর্থযাত্রীরা অন্য তীর্থযাত্রীদের পথ উন্মুক্ত করার জন্য নিজেদের সাথে আনা লবণ পথের উপর ছিটিয়ে দিত। অতঃপর রুটি,পনির,সবুজ শাকসবজি ও খেজুরের মতো আইটেমগুলোর মধ্যে লবণও একটি আইটেম হিসেবে পরিগণিত হয় যা লোকেরা তাদের মানতের অংশ হিসাবে এই সমাধিতে বিতরণ করে থাকে।
ইমামজাদেহ সালেহ এর মাজার, তেহরান | |