মারাঞ্জাব মরুভূমি, ইসফাহান
মারাঞ্জাব মরুভূমি ইসফাহান প্রদেশের আরান ভা বিদগোল কাউন্টির একটি জনপ্রিয় পর্যটন গন্তব্য। বালির আস্তর এবং পাহাড়ের দুর্দান্ত ভুদৃশ্য নিয়ে মারাঞ্জাব মরুভূমি একটি লবণ-হ্রদের কাছে অবস্থিত এবং একটি জাতীয় উদ্যানের সাথে যুক্ত।
এই অত্যাশ্চর্য মরুভূমির অন্যতম নিদর্শন হলো মারাঞ্জাবের শাহ আব্বাসি সরাইখানা। এই কাঠামোটি ১০১২ হিজরিতে সাফাভি শাসক শাহ আব্বাসের আদেশে সিল্ক রোড বরাবর তৈরি করা হয়েছিল যাতে যাত্রীরা, যাদের অধিকাংশই মরুভূমির মধ্য দিয়ে ভ্রমণ করত,তারা এই রাস্তার পাশের সরাইখানায় রাত কাটাতে পারে। সরাইখানাটি প্রায় একটি বর্গক্ষেত্রের মতো এবং এটি তিন হাজার পাঁচশ বর্গমিটার এলাকা জুড়ে নির্মিত হয়েছে। এতে উনত্রিশটি কক্ষ রয়েছে।
মারাঞ্জাব ভ্রমণের পর,শাহ আব্বাসি সরাইখানাই শুধু একটি সাইট যা পরিদর্শন করা যায়। এই অঞ্চলের ঐতিহাসিক ও সাংস্কৃতিক নিদর্শনগুলোর কথা ভুলে গেলে চলবে না। তার মধ্যে একটি দস্তকান্দ কূপ। কূপটি সরাইখানা থেকে পাঁচ কিলোমিটার পূর্বে অবস্থিত এবং তাজা ও পানীয় জলের আধার। পানির বিশুদ্ধতার কারণ হলো বালির স্তর যা লবণ শোষণ করে পানিকে বিশুদ্ধ করে।
মারাঞ্জাবের প্রাকৃতিক আকর্ষণগুলো এর ঐতিহাসিক নিদর্শনগুলোর মতোই গুরুত্বপূর্ণ। তার মধ্যে একটি হলো লবণহ্রদ বা সল্ট লেক। এই হ্রদটি মাসিলেহ এবং আরান ভা বিদগোলের সল্ট লেক নামেও পরিচিত। শুর নদী এবং অন্যান্য নদীর পানি এই হ্রদে এসে পড়ে। এটি শাহ আব্বাসি সরাইখানা থেকে নয় কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। বছরের বেশিরভাগ সময় এটি লবণে ঢাকা থাকে। বৃষ্টির পরে এবং যখন পানি বাষ্পীভূত হয় তখন এর পৃষ্ঠদেশে জ্যামিতিক কাঠামো পাওয়া যায়,যা লবণের স্ফটিক দিয়ে তৈরি।
মারাঞ্জাবের আরেকটি আকর্ষণ হলো জাজিরে সারগারদান (সারগারদান দ্বীপ), এটিও হ্রদের কাছে অবস্থিত। এই দ্বীপটি পানিতে নয়,লবণের সমুদ্রে ভাসছে। বৃষ্টির পর দ্বীপের ভাসমান অবস্থা ও নড়াচড়া দেখা যায়। বৃষ্টি শুরু হলে দ্বীপের চারপাশে পানি জমে যায় আর তখন পানির নড়াচড়া দেখে মনে হয় যেন দ্বীপটিও নড়াচড়া করছে।
উঁচু বালির স্তরের উপরে হাঁটা, দ্রুত বিভিন্ন রূপে পরিবর্তিত হওয়া ভাসমান বালির সাথে খেলা করা মারাঞ্জাব মরুভূমিতে ভ্রমণের অন্যতম আকষর্ণীয় বিষয়।
মারাঞ্জাব মরুভূমি, ইসফাহান | |