এজেন্সি
সাইয়্যেদ মোহাম্মদ হোসেইনি বেহেশতি

সাইয়্যেদ মোহাম্মদ হোসেইনি বেহেশতি

সাইয়্যেদ মোহাম্মদ হোসেইনি বেহেশতি

সাইয়্যেদ মোহাম্মদ হোসেইনি বেহেশতি ১৩০৭  সালের ২ অবান (২৩ নভেম্বর ১৯২৮ খ্রি.)ইসফাহানে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি সুপ্রিম কোর্টের প্রধান এবং ইরানের জমহুরি ইসলামি  পার্টির (ইসলামিক রিপাবলিক পার্টি অফ ইরান) প্রথম মহাসচিব।

তাঁর ধর্মীয় শিক্ষা ইসফাহানের সাদর মাদ্রাসায় শুরু হয় এবং উচ্চতর পর্যায়ের শিক্ষা কোমের ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে চালিয়ে যান এবং আয়াতুল্লাহ বোরুজেরদি,ইমাম খোমেইনি,আল্লামা তাবাতাবাই,মুহাক্কেক দামাদ এবং খুনসারি প্রমুখের নিকট শিক্ষা গ্রহণকরেন। ধর্মীয় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে অধ্যয়নের পাশাপাশি তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যয়নও চালিয়ে যান এবং তেহরান বিশ্ববিদ্যালয়ের ধর্মতত্ত্ব অনুষদ থেকে দর্শনে পিএইচডি ডিগ্রি লাভ করেন। তিনি ১৩২৬ সালে (১৯৪৭ খ্রি.) গ্রামাঞ্চলে প্রচার কাজ দিয়ে তার রাজনৈতিক-সাংস্কৃতিক কার্যকলাপ শুরু করেন এবং তেল জাতীয়করণ আন্দোলনের চূড়ান্ত পর্যায়ে তিনি তীর মাসের ৩০ তারিখে (২০ জুলাই) ইসফাহানের বিক্ষোভ ও ধর্মঘটে অংশগ্রহণ করেন। ১৩৩৩ সালে (১৯৫৪) তিনি কোমে দ্বীন ওয়া দানেশ (ধর্ম ও জ্ঞান) মহাবিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেন এবং ৯ বছর ধরে এর পরিচালনার দায়িত্বে ছিলেন।

১৩৪৪ সালে (১৯৬৫ খ্রি.) আয়াতুল্লাহ মিলানি এবং আয়াতুল্লাহ হায়েরির আদেশে তিনি জার্মানি চলে যান এবং হামবুর্গের ইসলামিক সেন্টারের দায়িত্ব গ্রহণ করেন। বেহেশতি মুসলমানদের ধর্মীয় বিষয় নিয়ে কাজ করার সময় কিছু ইরানি ছাত্রের সহায়তায় ‘ইউনিয়ন অফ ইসলামিক অ্যাসোসিয়েশনস অফ পারসিয়ান ল্যাঙ্গুয়েজ স্টুডেন্ট্‌স’ গঠন করেন এবং বিদেশী ভাষায় তাঁর দক্ষতার কারণে ইউরোপীয়দের কাছে ইসলামকে পরিচিত করার কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করেন।

তিনি ১৩৪৯ সালে (১৯৭০ খ্রি.) ইরানে সফরে আসেন, কিন্তু সাভাক (রাজকীয় গোয়েন্দা সংস্থা) তাঁকে জার্মানিতে ফিরে যেতে বাধা দেয়। বেহেশতি ইরানের শিক্ষা বোর্ডের জন্য ধর্মীয় শিক্ষাপাঠ্যপুস্তক পরিকল্পনা ও প্রস্তুত করেন এবং তেহরান ও কোমে শিক্ষামূলক ও প্রচার-প্রচারনার মাধ্যমে তাঁর সাংস্কৃতিক কার্যক্রম পুনরায় শুরু করেন।

১৩৫৬ সালে (১৯৭৭) জনগণের বিপ্লবী সংগ্রামের জাগরণের তুঙ্গে তিনি জামেয়ে রুহানীয়াতে মুবারেয দল (বিপ্লবী আলেম সংঘ) গঠনে সহযোগিতা করেন এবং ইমাম খোমেনির নির্দেশে বিপ্লবী পরিষদ গঠন করেন। সেই সাথে বিদেশে তিনি আন্দোলনরত ইরানিদের বিভিন্ন দল ও সক্রিয় সংগঠনগুলোর সাথে সম্পর্ক স্থাপন এবং জনগণের বিপ্লবী সংগ্রামকে সংগঠিত করতে কার্যকর ভূমিকা পালন করেন। ইসলামি বিপ্লবের বিজয়ের পর একদল আলেমদের সাথে তিনি ইসলামিক রিপাবলিক পার্টি অফ ইরান প্রতিষ্ঠা করেন এবং পার্টির মহাসচিব নির্বাচিত হন।

বিপ্লবের বিজয়ের পর প্রথম মাসগুলিতে, তিনি বিশেষজ্ঞ পরিষদ (মজলিশে খেবরেগান) গঠন ও নির্বাচন আয়োজনের জন্য ব্যাপক প্রচেষ্টা চালান এবং তেহরানের জনগণের প্রতিনিধি হিসেবে বিশেষজ্ঞ পরিষদের সদস্য এবং এ পরিষদের ডেপুটি নির্বাচিত হন। সংবিধানের খসড়া প্রণয়ন এবং এর চূড়ান্ত অনুমোদনে তিনি কার্যকর ভূমিকা পালন করেন। একই বছর, তিনি ইমাম খোমেইনি কর্তৃক ইরানের সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি মনোনীত হন।

১৩৬০ সালের তীর মাসের ৭ তারিখে (১৯৮১ সালের ২৮ জুলাই) ইসলামিক রিপাবলিক পার্টির ভবনে বোমা বিস্ফোরণে মোহাম্মদ বেহেশতি তাঁর বাহাত্তর জন সঙ্গীসহ শাহাদাতবরণ করেন।

সাইয়্যেদ মোহাম্মদ হোসেইনি বেহেশতি

:

:

:

: