ড. মোস্তফা চামরান
মোস্তফা চামরান ফারসি ১৩১১ সালে (১৯৩২ খ্রি.) তেহরানে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি তার মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা এনতেসারিয়েহ স্কুল,আলবোর্জ হাই স্কুল এবং দার আল-ফুনুনে সমাপ্ত করেন। এই বছরগুলিতে তিনি তেল শিল্পের জাতীয়করণ এবং পরবর্তী সংগ্রামগুলোতে অংশগ্রহণ করেন। তিনি তেহরান বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তড়িৎ প্রকৌশলে ডিগ্রি এবং আমেরিকার টেক্সাসের A&M বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইলেকট্রনিক্স এবং প্লাজমা পদার্থবিদ্যায় ডক্টরেট/পি.এইচ.ডি ডিগ্রি অর্জন করেন। তিনি ছিলেন তেহরান বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামি ছাত্র সংঘের প্রথম সদস্যদের অন্যতম। তিনি ১৪তম সংসদে ড. মোসাদ্দেকের আন্দোলনের সময়কাল থেকে তেল শিল্প জাতীয়করণ পর্যন্ত রাজনৈতিক সংগ্রামে অংশগ্রহণ করেন। ২৮ মোরদাদের (আগস্ট) অভ্যুত্থানের পর তিনি ইরানের নাহযাতে মোকাভেমাতে মিল্লি (জাতীয় প্রতিরোধ আন্দোলন) দলে যোগ দেন।
আমেরিকায় তিনি প্রথমবারের মতো ছাত্রদের জন্য আঞ্জুমানে ইসলামি প্রতিষ্ঠা করেন এবং তিনি ক্যালিফোর্নিয়ায় ইরানি ছাত্র সংঘেরও অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন। ১৩৪২ সালের ১৫ খোরদাদের (৫ জুন, ১৯৬৩)) আন্দোলনের পর তিনি মিশরে চলে যান এবং দুই বছর গেরিলা ও গেরিলা যুদ্ধের বিষয়ে শিক্ষা গ্রহণ করেন এবং ইরানি বিপ্লবীদেরকে গেরিলা যুদ্ধের প্রশিক্ষণ দানের দায়িত্ব পালন করেন। তিনি ইরানি বিপ্লবীদের শিক্ষাদানের জন্য লেবাননে গেরিলা ঘাঁটি তৈরি করেন।
ইসলামি বিপ্লবের বিজয়ের পর তিনি ইরানে ফিরে আসেন এবং সায়াদাবাদ বিপ্লবী গার্ড বাহিনীর প্রথম দলকে প্রশিক্ষণ দান শুরু করেন এবং প্রধানমন্ত্রীর বিপ্লব বিষয়ক উপদেষ্টা এবং প্রতিরক্ষা মন্ত্রী হিসেবে তিনি কুর্দিস্তানের বিদ্রোহ দমনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। ইরানের ওপর চাপিয়ে দেওয়া যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর তিনি যুদ্ধক্ষেত্রে গমন করেন এবং সর্বপ্রথম খুজিস্তানের দুশমনদের বিরুদ্ধে গেরিলা হামলা শুরু করেন। যুদ্ধের সময় তাঁর কার্যরী পদক্ষেপগুলোর মধ্যে ছিল আহওয়াজে একটি অনিয়মিত যুদ্ধ সদর দপ্তর স্থাপন, বিভিন্ন স্থানে সামরিক বিভিন্ন স্থানে সামরিক রাস্তা নির্মাণ, কারুন নদীর তীরে পানির পাম্প স্থাপন ও একটি খাল নির্মাণ, সেনাবাহিনী, বিপ্লবী গার্ড বাহিনী ও স্বেচ্ছাসেবক বাহিনীর মধ্যে সমন্বয় সাধন। তিনি ১৩৬০ সালের (১৯৮২ খ্রি.) ৩১ খোরদাদ দেহলাভিয়ে নামক স্থানে যুদ্ধের সম্মুখ ফ্রন্টে ৪৯বছর বয়সে শাহাদাতবরণ করেন।
ইবরাহিম হাতামিকিয়া নির্মিত ‘চে’ চলচ্চিত্রটি ড. মোস্তফা চামরানের জীবন ও সংগ্রামের উপর ভিত্তি করে নির্মিত হয়েছে।
ড. মোস্তফা চামরান | |