নীল মসজিদ (মসজিদ-ই কাবউদ), তাবরিয
এই মসজিদের মূল প্রবেশদ্বারের শিলালিপি অনুসারে এই ঐতিহাসিক মসজিদটি আবোলমোজাফর জাহান শাহ কারা কয়ুনলু কর্তৃক আবার কিছু কিছু বর্ণনা অনুসারে তাঁর স্ত্রী ও কন্যা কর্তৃক ৮৭০ হিজরিতে (১৪৬৫ খ্রি.) তাবরিযে নির্মিত হয়েছিল।
এই মসজিদটিকে বিভিন্ন নামে উল্লেখ করা হয়েছে, যেমন : ‘জাহান শাহ মোজাফফরিয়েহ কাবউদ’ (এর বারান্দার অভ্যন্তরীণ পৃষ্ঠের রঙের কারণে); ‘ফিরোজেহ ইসলাম’ (পুরোনো দিনে এর ফিরোজা রঙের গম্বুজের কারণে);এবং গাউই (স্থানীয় উপভাষায় যার অর্থ নীল) মসজিদ। কিছু কিছু প্রতিবেদন অনুসারে,১৭ শতকে ভূমিকম্পের ফলে এই ভবনের প্রধান ছাদগুলো ধসে পড়ে এবং শুধু বারান্দা,প্রবেশদ্বার,কিছু আড়া এবং প্রধান খিলানগুলো অবশিষ্ট ছিল।
এই কমপ্লেক্সের প্রবেশদ্বারটি উঁচু ভূমিতে নির্মিত, যার উপরে একটি ত্রিকোনাকৃতির মতো খিলান ছিল। ভবনের সাথে সর্পিল নকশা যুক্ত দুটি কলাম প্রবেশদ্বারের উভয় পাশে দেখা যায় যা চারটি করিডোর এবং চারটি স্তম্ভযুক্ত এবং চিত্রাঙ্কণ দ্বারা সুন্দরভাবে সজ্জিত ছিল। এই চিত্রগুলো ইরানের প্রাচীনতম চিত্রগুলোর অন্যতম। অল্প দূরেই রয়েছে পৃথক পৃথক দুটি বড় হল নিয়ে গঠিত নামায কক্ষে প্রবেশ করার জন্য মসজিদের প্রধান প্রবেশদ্বার। উভয় হলের মূল ছাদ ভেঙে নতুন করে নির্মাণ করা হয়েছে। মসজিদের মূল কুলুঙ্গিটি দ্বিতীয় হলটিতে অবস্থিত। এই কুলুঙ্গিটি ছোট ছোট খোদাই করা অষ্টভুজাকৃতির নীল টাইলস দিয়ে সজ্জিত।
বিল্ডিংয়ের মেঝে পাথরের স্ল্যাব দিয়ে পাকা করা এবং এর দেয়ালগুলো আন্তঃসংযুক্ত রঙিন টাইলসের ছোট ছোট টুকরা দিয়ে সজ্জিত যা দেখতে এক টুকরো কাপড়ের মতো লাগে। দেয়ালগুলো মার্বেল পাথর দিয়ে তৈরি এবং ‘বান্নাই স্ক্রিপ্ট’ (ইসলামী ক্যালিগ্রাফির একটি রূপ) এবং খোদাই করা টাইলস (মোজাইক) দিয়ে সজ্জিত। অন্যান্য আজারী সজ্জাশৈলীর তুলনায় এর ভিন্নতা ও শ্রেষ্ঠত্বের কারণে এই ভবনের টাইলিং শৈলী অসাধারণ এবং অনন্য। মসজিদটি রাকা,কুফি,নাসখ,সুলস ও নাস্তালিকের মতো লিপিসহ অসংখ্য শিলালিপি দিয়ে সজ্জিত করা হয়েছে,যার মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো ৬০ সেমি প্রস্থের শিলালিপি যা কুলুঙ্গির আড়াআড়ি প্রান্তের উপরে স্থাপন করা হয়েছে।
নীল মসজিদ (মসজিদ-ই কাবউদ), তাবরিয | |