সাইয়্যেদ জামালুদ্দীন আসাদাবাদি
সাইয়্যেদ জামালুদ্দীন আসাদাবাদি ছিলেন কাজার বাদশাহ নাসিরুদ্দীন শাহের আমলে ইসলামি বিশ্বের একজন বুদ্ধিজীবী ও চিন্তাবিদ। তিনি হামেদানের আসাদাবাদে ১৮৩৯ সালে জন্মগ্রহণ করেন এবং কাজভিন ও তেহরানে অধ্যয়ন করেন। তারপর ১২৬৬ হিজরিতে হিজরিতে শিক্ষা চালিয়ে যাওয়ার জন্য আতবাতে যান এবং শেখ মোর্তজা আনসারীর কাছে চার বছর অধ্যয়ন করেন। অমঙ্গলাকাঙ্ক্ষীদের কারণে এবং শেখ আনসারীর পরামর্শে তিনি মুম্বাই যান এবং সেখানে নতুন বিজ্ঞান শিক্ষা লাভ করেন। ১২৭৩ হিজরিতে তিনি মক্কা, কারবালা ও নাজাফ যান এবং তারপর ইরানে ফিরে আসেন। ১২৭৮ হিজরিতে তিনি কাবুল চলে যান এবং আফগানিস্তানে তাঁর চার বছর অবস্থানকালে তিনি তাঁর সংস্কার কার্যক্রম চালিয়ে যান। তারপর তিনি ভারত হয়ে মিশরে যান এবং সেখান থেকে ইস্তাম্বুল যান,কিন্তু তিনি শায়খুল ইসলাম হাসান এফেন্দির দ্বারা সমালোচিত হন। ফলে তিনি ইস্তাম্বুল ছেড়ে মিশরে ফিরে যেতে বাধ্য হন। তারপর থেকে তাঁর রাজনৈতিক কার্যকলাপ এবং বৈজ্ঞানিক খ্যাতি শুরু হয় এবং মিশরীয় মন্ত্রী রিয়াদ পাশা তাঁকে সেখানে অবস্থান করার অনুরোধ করেন। তিনি কায়রোর আল-আযহার বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপনা করতেন এবং শেখ মুহাম্মাদ আবদুহ ছিলেন সেখানে তাঁর সবচেয়ে বিখ্যাত ছাত্রদের একজন। মিশরে সাইয়্যেদ জামাল ‘দেশপ্রেমিক পার্টি অ্যাসোসিয়েশন’ প্রতিষ্ঠা করেছিলেন,যা ব্রিটিশ নীতির বিপক্ষে একটি শক্তিশালী প্রতিবন্ধক ছিল। ব্রিটিশ বিরোধী নীতির কারণে তিনি মিশর ছেড়ে ভারতে ফিরে যেতে বাধ্য হন। হায়দরাবাদে গুপ্ত সংগঠন ‘ওরওয়া’ তাঁর দ্বারা প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল।
তামাক বিদ্রোহের সময় তিনি এর নেতাদের (ফাল আসিরি,মির্জা শিরাজি ও শতিয়ানি) সাথে যোগাযোগ করেছিলেন। মির্জা আগা খান কেরমানিও তাঁর সাথে সম্পর্ক রেখেছিলেন। চিন্তার ক্ষেত্রে সাইয়্যেদ জামালুদ্দীনের সবচেয়ে বড় স্বপ্ন ও আকাঙ্ক্ষা ছিল ইসলামি গরিমার অগ্রগতি ও পুনরুজ্জীবনের উপর ভিত্তি করে ইসলামি আন্দোলন ও ইসলামের ঐক্য এবং ইউরোপীয় আধিপত্য থেকে মুক্তি। তাঁর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ রচনাগুলো হলো: নৈরাজ্যবাদী ধর্মের সত্যাসত্য এবং নৈরাজ্যবাদীদের অভিব্যক্তিসমূহ (নিৎশেকে প্রত্যাখ্যান সংক্রান্ত প্রবন্ধসমূহ),আফগানিস্তানের ইতিহাস ও সৌন্দর্যবোধ সম্বন্ধীয় প্রবন্ধসমূহ।
১৮৯৭ সালের ৯ মার্চ তুরস্কের ইস্তাম্বুলে তিনি মৃত্যুবরণ করেন।
সাইয়্যেদ জামালুদ্দীন আসাদাবাদি | |
নৈরাজ্যবাদী ধর্মের সত্যাসত্য এবং নৈরাজ্যবাদীদের অভিব্যক্তিসমূহ (নিৎশেকে প্রত্যাখ্যান সংক্রান্ত প্রবন্ধসমূহ),আফগানিস্তানের ইতিহাস ও সৌন্দর্যবোধ সম্বন্ধীয় প্রবন্ধসমূহ |