এজেন্সি
বরণ

বরণ

বরণ

তেহরানে তখন শীতকাল। লতিফের বয়স ১৭। সে মেমার পরিচালিত একটি নির্মাণ সাইটে কাজ করে। লতিফ সেই শ্রমিকদের জন্য চা ও খাবার তৈরি করে পরিবেশন করে যাদের সাথে তার প্রায়ই ঝগড়া হয়। শ্রমিকরা সারা ইরান থেকে আসে,তবে বিশেষ করে আজারবাইজান থেকে। শ্রমিকদের কেউ কেউ আফগানিস্তানের উদ্বাস্তু। তাদের কোনো পরিচয়পত্র নেই এবং তারা অবৈধভাবে চাকরি করছে। লেবার ইন্সপেক্টররা এলে তাদেরকে লুকিয়ে রাখতে হয়। নাজাফ নামে একজন আফগান কর্মী পড়ে গেলে তার পা ভেঙে যায় এবং তাকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সোলতান নামের আরেক আফগানি নাজাফের ১৪ বছর বয়সী ছেলে রহমতকে নিয়ে আসে তার স্থলাভিষিক্ত হওয়ার জন্য। মেমার যখন দেখে যে রহমত খুব ছোট তখন সে রহমতকে লতিফের কাজের জন্য নিয়োগ করে আর লতিফকে শ্রমিকের কাজে নিযুক্ত করে। লতিফ ক্ষিপ্ত হয়ে রহমতকে হুমকি দেয়,তার কাজে বিঘ্ন ঘটাবার চেষ্টা করে এবং তার উপর গোয়েন্দাবৃত্তি করতে থাকে।

একদিন সে রহমতকে মেয়ে বলে আবিষ্কার করে হতবাক হয়ে যায়। যখন সে তাকে চুল আঁচড়াতে দেখে তখন সে দিশেহারা হয়ে পড়ে এবং একটি অদ্ভুত শব্দ শুনতে পায়। লতিফের মনোভাব পরিবর্তিত হয়;সে প্রতিরক্ষামূলক ও সহায়তাকারীতে পরিণত হয়। সে তার প্রেমে পড়ে যায়। যদিও রহমত নিজেকে প্রকাশ করে না,কিন্তু সময়ের সাথে সাথে সে সাড়া দেয় বলে মনে হয়। ইন্সপেক্টরদের একটি আকস্মিক পরিদর্শনের সময় তারা রহমতের মুখোমুখি হয়। সে আতঙ্কিত হয়ে পালিয়ে যায় এবং তারা তাকে তাড়া করে। লতিফ ইন্সপেক্টরদের বাধা দেয়, রহমতকে পালাতে দেয়। তখন লতিফকে মারধর করে গ্রেফতার করা হয়।

লতিফ রহমতের অনুপস্থিতি সহ্য করতে পারে না। সে যেখানে আফগানরা বাস করে সেখানে তাকে খুঁজতে যায়। আফগানদের মধ্যে নারী পোশাকে দাঁড়িয়ে থাকা রহমত লতিফকে দেখে তার দিকে তাকায়,তারপর চলে যায়। লতিফ তার কথা জানতেও পারে না। পরের দিন সে জানতে পারে যে রহমত নদীর কাছে কাজ করে। লতিফ সেখানে ছুটে যায়। রহমতকে অসন্তুষ্টভাবে অন্য মহিলাদের সাথে ভারী পাথর বহন করতে দেখে। সে ব্যথিত হয় এবং তাকে সাহায্য করার জন্য একটি উপায় খুঁজে পেতে চায়। সে তার মজুরি পায় এবং তা নাজাফকে দেওয়ার জন্য সোলতানের হাতে তুলে দেয়। তারা পরের দিন মাজারে দেখা করতে রাজি হয়। সোলতানের পরিবর্তে নাজাফ সেখানে আসে এবং লতিফকে বলে যে সোলতান আফগানিস্তানে চলে গেছে।

পরের দিন লতিফ শুনতে পায় যে নাজাফও আফগানিস্তানে পারিবারিক সমস্যার সম্মুখীন,কারণ, তার ভাইকে হত্যা করা হয়েছে। লতিফ জানতে পারে রহমতের আসল নাম বরণ। লতিফ কাঠের গুড়ি বহনকারী একজন ক্লান্ত বরণকে খুঁজতে যায়। পরের দিন সকালে নাজাফ নির্মাণস্থলে মেমারের কাছে ঋণের জন্য অর্থ চেয়ে  ব্যর্থ হয়। লতিফ তার একমাত্র মূল্যবান জিনিস বিক্রি করে,তার পরিচয়পত্র। যখন সে টাকা নিয়ে আসে,লতিফ জানতে পারে যে নাজাফ এবং তার পরিবার আফগানিস্তানে ফিরে যাওয়ার জন্য এই অর্থ ব্যবহার করবে। লতিফ মোহাবিষ্ট হয়ে পড়ে এবং মাজারে আশ্রয় নেয়। সেখানে সে ওই একই শব্দ শুনতে পায় যখন সে বরণকে প্রথম দেখেছিল। সে তার ভাগ্যকে মেনে নেয়।

পরের দিন একটি ট্রাকে গৃহস্থালি সামগ্রী লোড করতে নাজাফকে সাহায্য করার সময় লতিফ অবশেষে বরণের মুখোমুখি হয়। চোখের যোগাযোগের মাধ্যমে তারা তাদের ভালোবাসার অনুভূতি বিনিময় করে। বরণ নিজেকে আবৃত করে ট্রাকের কাছে যাওয়ার সময় তার জুতা কাদায় আটকে যায়। লতিফ কাদা থেকে জুতা বের করে তার হাতে দেয়। ট্রাক বরণকে নিয়ে চলে যায়। লতিফ কাদার মধ্যে বিদ্যমান বরণের পদচিহ্নের দিকে তাকিয়ে স্মিত হাসতে থাকে যখন বৃষ্টির ফোটা মাটিতে পড়ে তা ঢেকে দিতে থাকে।

অভিনয়ে : হোসেইনি আবেদিনি, যাহরা বাহরামি, মোহাম্মদ আমির নাজি, আব্বাস রাহিমি, গোলাম আলি বাখসি প্রমুখ

মুক্তির তারিখ : ৩১ জানুয়ারি,২০০১

বরণ
0
প্রযোজক : মাজিদ মাজিদি ও ফুয়াদ নাহাস
পরিচালক : মাজিদ মাজিদি

:

:

:

: