কালার অব প্যারাডাইস
গল্পটি মোহাম্মাদ নামে এক অন্ধ ছেলেকে ঘিরে আবর্তিত হয়েছে যে গ্রীষ্মের ছুটিতে তেহরানের তার বিশেষ স্কুল থেকে ছুটি পেয়েছে। তার বাবা হাসেম যে তার অন্ধত্বে লজ্জিত এবং ভারাক্রান্ত সে তাকে দেরীতে নিতে আসে এবং তারপরে প্রধান শিক্ষককে গ্রীষ্মের সময় মোহাম্মদকে স্কুলে রাখতে রাজি করার চেষ্টা করে। প্রধান শিক্ষক তাকে প্রত্যাখ্যান করে। তাই হাসেম অবশেষে তাকে বাড়িতে নিয়ে যায়।
বিপত্নীক হাসেম এখন স্থানীয় একজন মহিলাকে বিয়ে করতে চায় এবং বিয়ের জন্য প্রস্তুতি গ্রহণ করে। সে উপহার নিয়ে মহিলার বাবা-মায়ের কাছে যায় এবং তারা তার জন্য দোয়া করে। সে এই সত্যটি লুকানোর চেষ্টা করে যে তার ছেলে অন্ধ। কারণ, সে ভয় পায় যে মেয়েটির পরিবার এটিকে একটি অশুভ লক্ষণ হিসেবে দেখবে।
এদিকে,মোহাম্মদ তার বোনদের সাথে তার গ্রামের সুন্দর পাহাড়ে আনন্দে ঘুরে বেড়ায়। সে তার চারপাশের প্রকৃতিকে স্পর্শ করে এবং অনুভব করে,প্রাণীদের শব্দ শোনে এবং সেগুলোকে অনুকরণ করে। সে প্রকৃতির প্রতি একটি অনন্য মনোভাব প্রদর্শন করেন এবং একটি ভাষা হিসাবে এর ছন্দ এবং টেক্সচার বুঝতে পারে বলে মনে হয়। মোহাম্মদ তার বোনদের সাথে স্থানীয় স্কুলে যায় এবং তার পাঠ্যপুস্তক থেকে ব্রেইল থেকে পাঠ করেযা শিশুদেরকে এবং শিক্ষককে অবাক করে দেয়।
কনের পরিবার মোহাম্মদ সম্পর্কে জানতে পারবে এই ভয়ে হাশেম মোহাম্মদকে একজন অন্ধ ছুতারের কাছে নিয়ে গিয়ে রেখে আসে যে তাকে শিক্ষা দিতে রাজি হয়। অন্ধ ছুতার ছেলেটিকে পরামর্শ দিতে শুরু করে,কিন্তু মোহাম্মদ কাঁদতে শুরু করে এবং ব্যক্ত করে যে সে স্রষ্টাকে দেখতে চায়। মোহাম্মদ বলে যে, তাকে অন্ধ করার জন্য স্রষ্টা অবশ্যই তাকে ভালোবাসবেন না এবং বলে, তার শিক্ষক শিখিয়েছেন যে স্রষ্টা অন্ধ শিশুদেরকে তাদের অন্ধত্বের কারণে বেশি ভালোবাসেন। মোহাম্মাদ তখন প্রশ্ন করে কেন স্রষ্টা তাকে অন্ধ করে দেবেন যদি তিনি সত্যিই তাকে বেশি ভালোবাসেন?
অন্যদিকে মোহাম্মদের দাদি ভেঙে পড়েন যখন তিনি বুঝতে পারেন যে হাশেম মোহাম্মদকে একজন অন্ধ ছুতারের অধীনে শিক্ষাগ্রহণের জন্য পাঠিয়েছে এবং কষ্টে তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন। তিনি বাড়ি ছেড়ে চলে যান,কিন্তু হাসেম তাকে থাকতে রাজি করার চেষ্টা করে,তার ভাগ্য নিয়ে প্রশ্ন করে এবং তার মৃত স্ত্রী ও অন্ধ ছেলের জন্য বিলাপ করে। চলে যাওয়ার সময় মোহাম্মদের দাদী মোহাম্মদের কাছ থেকে নেওয়া একটি চুলের কাটা পুকুরে ফেলে দেন এবং অজ্ঞান হয়ে যান। যখন তিনি এটিকে আবার খোঁজার চেষ্টা করেন তখন পানিতে পড়ে যান। হাসেম তাকে বাড়িতে নিয়ে যায়। অবশেষে,মোহাম্মদের দাদি মারা যান। কনের পরিবার এটিকে একটি অশুভ লক্ষণ হিসেবে দেখে এবং বিবাহ বন্ধ করে দেওয়া হয়।
সমস্ত আশা ধ্বংস হয়ে গেলে হাশেম মোহাম্মদকে ফিরিয়ে আনার সিদ্ধান্ত নেয়। সে অন্ধ ছুতারের কাছে গিয়ে মোহাম্মদকে ফিরিয়ে নিয়ে আসতে যায়। তারা জঙ্গলের মধ্যে দিয়ে বাড়ির দিকে রওয়ানা দেয়। যখন তারা একটি খরস্রোতা নদীর উপরে নির্মিত একটি ছোট কাঠের সেতু পার হতে যায় তখন সেতুটি ভেঙে পড়ে এবং প্রবল স্রোতে মোহাম্মদ পানিতে ভেসে যায়। এক মুহূর্তের জন্য হাশেম তার ছেলেকে টেনে নিয়ে যাওয়া দেখে হতবিহ্বল হয়ে তাকিয়ে থাকে;তাকে উদ্ধার করা অথবা ভার থেকে নিজেকে মুক্ত করার মধ্যে সে কোন্টি বেছে নেবে। মুহূর্ত পরেই সে সিদ্ধান্ত নেয়,নদীতে ঝাঁপ দেয় এবং স্রোতের তোড়ে দ্রুত গতিতে মোহাম্মদের পেছনে পেছনে ভেসে যেতে থাকে।
হাসেম কাস্পিয়ান সাগরের তীরে জেগে ওঠে এবং দেখে মোহাম্মদ অল্প দূরে স্থবির হয়ে পড়ে আছে। সে নিজেকে মোহাম্মদের শরীরের দিকে টেনে নিয়ে যায় এবং তাকে কোলে নেয়। হাসেম তার ছেলের দেহকে কোলে নিয়ে কাঁদতে থাকে এবং আকাশের দিকে তাকায়। একটি কাঠঠোকরার আওয়াজ শোনা যায় এবং সূর্য বেরিয়ে আসে;মোহাম্মদের আঙ্গুলগুলো আস্তে আস্তে নড়তে থাকে।
অভিনয়ে : হোসেইনি মাহজুব, মোহসেন রামেজানি, সালামে ফেইজি,ফারাহনাজ সাফারি প্রমুখ
মুক্তির তারিখ : ৯ ফেব্রুয়ারি, ১৯৯৯
কালার অব প্যারাডাইস | |
0 | |
প্রযোজক : মাজিদ মাজিদি ও ফুয়াদ নাহাস | |
পরিচালক : মাজিদ মাজিদি |