‘ইমাম খোমেইনী (রহ.) ছিলেন বিশ্বের মুক্তিকামী মানুষের নেতা’
ইমাম খোমেইনী (রহ.) ছিলেন বিশ্বের মুক্তিকামী মানুষের অবিসংবাদিত নেতা।
ইমাম খোমেইনী (রহ.) ছিলেন বিশ্বের মুক্তিকামী মানুষের অবিসংবাদিত নেতা। তিনি ইসলামী বিপ্লব প্রতিষ্ঠা করে বিশ্বের অসহায় ও বঞ্চিত মানুষের জন্য আশার আলো যুগিয়েছেন। তিনি চিন্তা ও সৃষ্টিশীলতার জগতে এতো বেশি বিষয়ের সমন্বয় ঘটিয়েছেন যা সত্যিই বিস্ময়কর। তিনি শুধু ইরানে নয় বরং গোটা বিশ্বে আলোড়ন সৃষ্টি করেছেন। তার প্রতিষ্ঠিত ইসলামী বিপ্লব আজ বিশ্বের মুক্তিকামী মানুষের জন্য উন্নয়নের এক রোল মডেল। শনিবার বিকেলে ইসলামি বিপ্লবের রূপকার ইমাম খোমেইনী (রহ.)-এর ৩৩ তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত ওয়েবিনারে বক্তারা এসব কথা বলেন।
ঢাকাস্থ ইরান সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের উদ্যোগে আয়োজিত এই ওয়েবিনারে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সাউথ-ইস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য প্রফেসর ড. আ ন ম মেশকাত উদ্দিন। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশে অবস্থিত ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরান দূতাবাসের হেড অব মিশন জনাব আলী পিরি এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দর্শন বিভাগের সাবেক চেয়ারম্যান ও গ্লোবাল ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশ এর উপাচার্য প্রফেসর ডক্টর আনিসুজ্জামান।
অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, ইমাম খোমেইনী (রহ.) ছিলেন একাধারে একজন দার্শনিক, ফকীহ, রাজনৈতিক নেতা এবং আধ্যাত্মিক সাধক। তার ইরফানী ব্যক্তিত্ব অন্য সব গুণের চাইতে বেশি সমাজকে প্রভাবিত করে।
ইমাম খোমেইনী এমন একজন রাজনৈতিক নেতা ছিলেন, যিনি রাজনীতিকে ধর্মের জন্য, ক্ষমতাকে জনগণের জন্য আর সমস্ত কিছুকে আল্লাহর জন্য চাইতেন। আল্লাহকে অন্বেষণ, খোদাভীতি আর মানুষের প্রতি ভালোবাসা, এই তিনটি বৈশিষ্ট্য ছিল ইমাম খোমেইনীর সাফল্যের রহস্যকথা এবং জনগণের মাঝে তার উচ্চ মর্যাদার কারণ। তিনি জনগণের হৃদয়ে শাসন করতেন।
ইমাম খোমেইনীর আদর্শ ও চিন্তাধারা ছিল তাওহীদি চিন্তাধারা ও হোসাইনী আন্দোলন থেকে বিচ্ছুরিত আলোকরশ্মি। যে চিন্তাধারার উৎস ছিল অনন্ত অসীম মহান আল্লাহর সাথে সম্পৃক্ত। ঠিক সেই সূর্যের ন্যায় যার কোনো অস্ত নেই। আর এই কারণেই ইরানের ইসলামী বিপ্লব ও ইমামের আন্দোলনের জ্যোতি বিশ্বের সকল দেশ ও জাতির মধ্যে ছড়িয়ে পড়েছে। আর তার সত্যকামী ও গৌরবময় চিন্তাধারা পৃথিবীর দূরবর্তীতম প্রান্তেও প্রতিধ্বনিত হয়েছে।
বক্তারা আরো বলেন, ইসলামী বিপ্লবের বিজয়ের পর থেকে বিগত ৪৩ বছরে ইরান যতসব উন্নয়ন অর্জন করেছে এবং অর্থনৈতিক, সামরিক, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সহ সকল সেক্টরে যে সমস্ত অগ্রগতি সাধন করেছে, তার সবই ইমাম খোমইেনীর আত্মপরিচিতি ও আত্মবিশ্বাসের অনুপ্রেরণার কাছে ঋণী।
ইমাম খোমেইনী সাংস্কৃতিক পরিবর্তনে বিশ্বাস করতেন। তিনি একদিকে যেমন অশুদ্ধ ও সাম্রাজ্যবাদী লেজুড় সংস্কৃতি প্রত্যাখ্যান করতেন। পাশাপাশি বিশুদ্ধ সংস্কৃতিকে খোদায়ী সংস্কৃতি বলে মনে করতেন। তিনি সংস্কৃতির পরিবর্তনে, স্বদেশী পণ্য ব্যবহারে, সাংস্কৃতিক উন্নয়নে পরিকল্পনা প্রণয়ন এবং সাংস্কৃতিক চিন্তা-চেতনায় আত্মবিশ্বাসের উপর অত্যধিক গুরুত্বারোপ করতেন।
ইমাম খোমেইনী সাংস্কৃতিক উপাদানকে যে কোনো সমাজের সংস্কারের উপায় বলে মনে করতেন এবং স্কুল-কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের ন্যায় সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠানসমূহকে সমাজে সংস্কৃতি গঠনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সংস্থা হিসাবে গণ্য করতেন।
ঢাকাস্থ ইরান সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের কালচারাল কাউন্সলর ড. সাইয়্যেদ হাসান সেহাতের সভাপতিত্বে ওয়েবিনারে আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফারসি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক ড. কে এম সাইফুল ইসলাম খান, বিশিষ্ট লেখক, গবেষক ও ইসলামী চিন্তাবিদ ড. ঈসা শাহেদী, খুলনায় অবস্থিত ইসলামি শিক্ষা কেন্দ্রের প্রিন্সিপাল হুজ্জাতুল ইসলাম সাইয়্যেদ ইব্রাহিম খলিল রাজাভী, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ফারসি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. কামাল উদ্দিন ও দৈনিক ইনকিলাবের সিনিয়র সাংবাদিক জামাল উদ্দিন বারী । অনুষ্ঠানে কবিতা আবৃত্তি করেন কবি আমিন আল আসাদ।অনুষ্ঠান সঞ্চালনায় ছিলেন ঢাকাস্থ ইরানিয়ান ইন্টারন্যাশনাল স্কুলের ভাইস প্রিন্সিপাল ড. আব্দুল কুদ্দুস বাদশা।
.