হিজবুল্লাহ যেভাবে লেবানন সীমান্তে ইসরাইলি সেনাদের ফাঁদে ফেললো
লেবাননের প্রতিরোধ সংগঠন হিজবুল্লাহর দফতর সেদেশের সীমান্ত এলাকায় স্থল অভিযান শুরু হওয়ার পর থেকে ইহুদিবাদী সেনাবাহিনীর হতাহতের নতুন পরিসংখ্যান প্রকাশ করেছে।
লেবাননের প্রতিরোধ সংগঠন হিজবুল্লাহর দফতর সেদেশের সীমান্ত এলাকায় স্থল অভিযান শুরু হওয়ার পর থেকে ইহুদিবাদী সেনাবাহিনীর হতাহতের নতুন পরিসংখ্যান প্রকাশ করেছে।
পার্সটুডে আরও জানিয়েছে, ওই অভিযানে ইহুদিবাদী সেনা নিহত হয়েছে ৯০ জন, আহত হয়েছে ৭৫০ জন, ৩৮টি মারকাভা ট্যাঙ্ক এবং ৩টি হার্মিস ৪৫০ ড্রোন, ১টি হার্মিস ৯০০ ড্রোন, ৪টি সামরিক বুলডোজার, ১টি হামের গাড়ি, একটি সাঁজোয়া যান, ১টি সেনা বহনকারী গাড়ি ধ্বংস হয়েছে। এই পরিসংখ্যান ইহুদিবাদী সেনাবাহিনীর ক্ষয়ক্ষতির আংশিক চিত্র মাত্র।
অবশ্য এই পরিসংখ্যানে ইসরাইলিদের সেনা ঘাঁটি, ব্যারাক, শহর কিংবা অধিকৃত শহরগুলোর মারাত্মক ক্ষয়ক্ষতি অন্তর্ভুক্ত নয়।
পার্সটুডে আরও জানিয়েছে, ইহুদিবাদী সেনাবাহিনীর ক্ষয়ক্ষতির এই পরিসংখ্যান প্রমাণ করে দক্ষিণ লেবানন পুনরুদ্ধার করা এবং সেই লক্ষ্যে একটি সুরক্ষা বেল্ট তৈরি করার ইসরাইলি অভিযান মারাত্মকভাবে ব্যর্থ হয়েছে। এই ব্যর্থতা ২০০৬ সালে ৩৩ দিনের যুদ্ধে পরাজয়ের চেয়েও শোচনীয় হবার আভাস দিচ্ছে।
এর আগে ইহুদিবাদী সেনাবাহিনী স্বীকার করেছে মাত্র ১ মাসে তাদের ৭৩ জন সেনা নিহত হয়েছে। তারা জানিয়েছে নিহত সেনাদের বেশিরভাগই উত্তর ফ্রন্টে যুদ্ধ করেছিল। দখলদার সেনাবাহিনীর প্রকাশিত পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ২ দিনে তাদের আরও ৮৮ জন সেনা আহত হয়েছে।
ইহুদিবাদী ইসরাইলের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ও জানিয়েছে, ১৫ অক্টোবর থেকে ইসরাইলের উত্তরাঞ্চলের হাসপাতালে ভর্তি হওয়া আহত সেনাসংখ্যা ৭৮৪ জনে পৌঁছেছে।
ইহুদিবাদী মিডিয়া এবং কমান্ডাররা উত্তর ফ্রন্টে তাদের বিপর্যয়কর পরিস্থিতির কথা উল্লেখ করেছে। তারা বলেছে: আমরা প্রতিদিন সকালে সাইরেনের শব্দে জেগে উঠি। হিজবুল্লাহ খুব দ্রুত তার শক্তি পুনরুদ্ধার করতে সক্ষম হয়েছে। দক্ষিণ লেবানন এখন ইসরাইলি সামরিক বাহিনীর জন্য একটি মৃত্যু ফাঁদে পরিণত হয়েছে।
ইসরাইলি সেনা কর্মকর্তারা স্বীকার করেছে: লেবাননের হিজবুল্লাহ নেতা সাইয়্যেদ হাসান নাসরাল্লাহর অনুপস্থিতিতে তারা কঠিন সময় পার করেছে। তারা তাদের কিছু সিনিয়র ফিল্ড কমান্ডারকেও হারিয়েছে। কিন্তু তারা প্রমাণ করেছে সিনিয়র নেতাদের অনুপস্থিতিতেও হিজবুল্লাহ কতোটা সুশৃঙ্খল যুদ্ধ কৌশল অনুসরণ করতে পারে।
শত্রুর স্থল আক্রমণকে কার্যকরভাবে মোকাবেলা করার ক্ষেত্রে হিজবুল্লাহ ব্যাপক সাফল্য অর্জন করেছে। বিশেষ করে রকেট হামলা, ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপসহ সব ধরণের বোমার বিস্ফোরণ ঘটিয়ে ইহুদিবাদী সেনাবাহিনীকে হতবাক করে দিয়েছে। তাদের অভিযানে ইসরাইলি সেনাদের ভেতর ব্যাপক হতাহতের ঘটনা ঘটেছে।
ইসরাইলের উত্তরাঞ্চলের ২৫টি বসতি থেকে সবাইকে সরে যাবার জন্য হিজবুল্লাহর নির্দেশের পর ওই অঞ্চল থেকে ইহুদিবাদীদের বাস্তুচ্যুতির এক নয়া অধ্যায় শুরু হয়েছে। বসতি ছেড়ে চলে যাবার ওই ঘটনা নেতানিয়াহুর গালে বড় রকমের একটি চপেটাঘাত।#
পার্সটুডে
.