পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞা বানচাল করতে ভিকটিম দেশগুলোর ঐক্যবদ্ধ হওয়া জরুরি
ইসলামী প্রজাতন্ত্র ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহিল উজমা খামেনেয়ী বলেছেন, আমেরিকা ও পশ্চিমা দেশগুলো যেসব দেশকে শত্রু বিবেচনা করে একের পর এক নিষেধাজ্ঞা চাপিয়ে দিচ্ছে সেসব দেশের উচিত ঐক্যবদ্ধ হওয়া এবং সম্মিলিতভাবে পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞা বানচাল করে দেয়া। ইরান সফররত বেলারুশের প্রেসিডেন্ট আলেকজান্ডার লুকাশেনকো গতকাল (সোমবার) সর্বোচ্চ নেতার সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে গেলে তিনি এ কথা বলেন।
ইরান এবং বেলারুশের মধ্যে অভিন্ন ক্ষেত্রের কথা তুলে ধরে সর্বোচ্চ নেতা বলেন, “দুই দেশই বলদর্পি শক্তি আমেরিকার নিষেধাজ্ঞার শিকার। যেসব দেশ আমেরিকা ও পশ্চিমা শক্তির নিষেধাজ্ঞার শিকার তাদের উচিত অভিন্ন জোট গড়ে তোলা এবং নিষেধাজ্ঞার অস্ত্রকে সমূলে ধ্বংস করা। আমরা বিশ্বাস করি অভিন্ন জোট গঠনের মাধ্যমে পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞা নস্যাৎ করা সম্ভব।”
সর্বোচ্চ নেতা বলেন, “পশ্চিমাদের অবৈধ একতরফা নিষেধাজ্ঞা আমাদের দেশের নানা ক্ষেত্রে চোখ ধাঁধানো অনেকগুলো উন্নতির সুযোগ তৈরি করে দিয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি, ওষুধ ও বায়োলজি, পরমাণু কর্মসূচি এবং ন্যানোটেকনোলজি।
সর্বোচ্চ নেতা জোর দিয়ে বলেন, যে সমস্ত দেশ আমেরিকার নিষেধাজ্ঞার শিকার তারা যদি একে অন্যের সক্ষমতাগুলোকে ব্যবহার করে তাহলে তারা সবাই ব্যাপকভাবে লাভবান হবে।
আয়াতুল্লাহ খামেনেয়ী বলেন, তার দেশ এবং বেলারুশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি, বাণিজ্য এবং আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোতে রাজনৈতিক তৎপরতাসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে সহযোগিতা করতে পারে।
নর্থ-সাউথ ট্রান্সপোর্টেশন করিডর সম্পর্কে তিনি বলেন, এই করিডর চালু হলে দুই দেশই লাভবান হবে। এছাড়া, রাশিয়া ও অত্র অঞ্চল সুবিধা পাবে। সেজন্য এই করিডর চালু করার ব্যাপারে প্রচেষ্টা জোরদার করা দরকার। সর্বোচ্চ নেতা বলেন, এর আগে যে সমস্ত চুক্তি হয়েছে সেগুলো শুধুমাত্র বৈঠকের ভিতরে সীমাবদ্ধ না রেখে সুনির্দিষ্ট সময়সীমার মধ্যে কাজে পরিণত করা দরকার।
সবশেষে তিনি বলেন. বিশ্বে আধ্যাত্মিকতার চর্চা থাকতে হবে, প্রতিটি জাতির জন্য আধ্যাত্মিকতা চালিকাশক্তি হিসেবে কাজ করে।
বৈঠকে বেলারুশের প্রেসিডেন্ট বলেন, ইরান সফরে আসার ক্ষেত্রে তার লক্ষ্য ছিল দুই দেশের মধ্যে সম্পর্কের নতুন অধ্যায় সূচনা করা। তিনি এ সময় সহযোগিতা এবং দৃঢ় চেতনার মধ্য দিয়ে সমস্ত চুক্তি বাস্তবায়নের প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেন।
লুকাশেনকো বলেন, নিষেধাজ্ঞার কবলে থাকার কারণে ইরান উন্নয়নের ক্ষেত্রে বিরাট অগ্রগতি লাভ করেছে এবং দারুন কিছু অভিজ্ঞতা অর্জন করেছে। আমরা বিশ্বাস করি, নিষেধাজ্ঞা আরোপের ফলে যে পরিবেশ তৈরি হয় তা যদি পুরোপুরি কাজে লাগানো যায় তাহলে সত্যিকার অর্থে উন্নতির সুযোগ সৃষ্টি করে।
বেলারুশের প্রেসিডেন্ট বলেন, তার ইরান সফরে আসার আরেকটি কারণ ছিল- সেটি হলো এখানকার অর্জনগুলো সরেজমিন পরিদর্শন করা।
বৈঠকের শেষ পর্যায়ে তিনি বলেন, বর্তমান আন্তর্জাতিক রাজনৈতিক বাস্তবতায় তার দেশ সত্যিকারের বন্ধু ও শত্রু চিনতে সক্ষম হয়েছে। প্রকৃত বন্ধুদের সঙ্গে বেলারুশ বিশেষ সহযোগিতায় আবদ্ধ থাকবে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।# পার্সটুডে
.