• May 29 2022 - 14:27
  • 91
  • : 4 minute(s)

ঢাকায় রেডিও তেহরান বাংলা বিভাগের ৪০তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপিত

রেডিও তেহরান বাংলা বিভাগের ৪০তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে বাংলাদেশের আইআরআইবি ফ্যন ক্লাবের উদ্যোগে ঢাকায় একটি বর্ণাঢ্য অনুষ্ঠান উদযাপিত হয়েছে। শুক্রবার (২৭ মে, ২০২২) জাতীয় প্রেসক্লাবে অনুষ্ঠিত এই মিলনমেলায় সারাদেশ থেকে রেডিও তেহরানের শ্রোতা ও শ্রোতা প্রতিনিধিরা অংশগ্রহণ করেন। সেইসঙ্গে অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ঢাকাস্থ ইরান দূতাবাসের হেড অব মিশন, কমার্শিয়াল কাউন্সেলর এবং রেডিও তেহরানের সাংবাদিক, সংবাদদাতা, সাবেক কর্মী এবং শুভাকাঙ্ক্ষীগণ।

অনুষ্ঠানের শুরুতে রেডিও তেহরান বাংলা বিভাগের পরিচালক মুজতবা ইব্রাহিমির শুভেচ্ছা বক্তব্য পড়ে শোনান রেডিও তেহরানের সিনিয়র সাংবাদিক এবং প্রিয়জন ও রংধনু আসরের প্রযোজক আশরাফুর রহমান। বক্তব্যে পরিচালক রেডিও তেহরানের সকল শ্রোতা ও শুভাকাঙ্ক্ষীকে শুভেচ্ছা, অভিনন্দন ও কৃতজ্ঞতা জানান। বাণীতে মুজতবা ইব্রাহিমি বলেন, “২০২২ সালের ১৭ এপ্রিল ইরানের বাংলাভাষী একমাত্র গণমাধ্যম রেডিও তেহরান ৪০তম বর্ষে পদার্পণ করেছে। আমি এই শক্তিশালী গণমাধ্যমের একজন সামান্য সেবক হিসেবে রেডিও তেহরানের সম্মানিত সহকর্মী, শ্রোতামণ্ডলী ও শুভাকাঙ্ক্ষীদের জানাচ্ছি আন্তরিক অভিনন্দন ও মুবারকবাদ।”

এরপর নিউ ইয়র্ক প্রবাসী বাংলাদেশি সাংবাদিক ও বেতার ব্যক্তিত্ব আকবর হায়দার কিরণের বাণীবদ্ধ বক্তব্য শোনানো হয়। অনুষ্ঠানের এক পর্যায়ে একইভাবে আগে থেকে ধারণ করা অডিও বক্তব্যে সবাইকে শুভেচ্ছা জানান ভারতের পশ্চিমবঙ্গের অধিবাসী রেডিও তেহরানের মনিটর এস. এম. নাজিম উদ্দিন। রেডিও তেহরানের নতুন মনিটর হিসেবে নিয়োগ পান কিশোরগঞ্জের গুরুদয়াল সরকারি কলেজের সহকারী অধ্যাপক মোঃ শাহাদত হোসেন। তিনি তার অনুভূতি ব্যক্ত করতে গিয়ে এরকম একটি বর্ণাঢ্য অনুষ্ঠানের আয়োজন করায় আইআরআইবি ফ্যান ক্লাবকে ধন্যবাদ জানান এবং রেডিও তেহরানের পক্ষ থেকে এ ধরনের অনুষ্ঠান আয়োজনের দাবি জানান।

অনুষ্ঠানে উপস্থিত শ্রোতাদের একাংশ রেডিও তেহরানের শ্রবণমান উন্নত করার লক্ষ্যে তিনি এই রেডিওর ট্রান্সমিটার শক্তিশালী করার অনুরোধ জানান।

এরপর উপস্থিত শ্রোতাদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন সিনিয়র শ্রোতা, ব্যাংকার ও কলাম লেখক মোহাম্মাদ জিল্লুর রহমান, গোপালগঞ্জের শ্রোতা ফয়সাল আহমেদ সিপন, ঢাকা সেনানিবাসের শ্রোতা রওশন আরা লাবনী, কুষ্টিয়ার শ্রোতা সংগঠক মোখলেছুর রহমান, শ্রোতা, রংপুরের শ্রোতা আশরাফুল আশেক, চুয়াডাঙ্গার শ্রোতা, ডিএক্সার ও সংগঠক মোহাম্মাদ আব্দুল্লাহ, ফরিদপুরের ভালোবাসি রেডিও শ্রোতা ক্লাবের আলো আহমেদ, সিনিয়র শ্রোতা শামীম উদ্দিন শ্যামল, কিশোরগঞ্জের ইন্টারন্যাশনাল রেডিও লিসেনার্স ক্লাবের কর্মকর্তা শরিফা আক্তার পান্না, কুড়িগ্রামের অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক ও শাপলা শর্টওয়েভ লিসেনার্স ক্লাবের সভাপতি আব্দুল কুদ্দুস মাস্টার, খুলনার শ্রোতা সংগঠক মুনির আহমেদ, নাটোরের ভয়েস অব ডি-এক্সিং এর এডমিন ইঞ্জিনিয়ার মঞ্জুরুল আলম রিপন, গাজীপুরের ফিরোজ আলম, নারায়ণগঞ্জের সিনিয়র শ্রোতা ও ডিএক্সার এইচ.এম. তারেক, যশোরের শ্রোতা ওবায়েদ হুসাইন আল-সামী প্রমূখ।

শ্রোতারা তাদের বক্তব্যে রেডিও তেহরানের শ্রবণমান উন্নত করার দাবি জানান। কেউ কেউ এফএম ব্যান্ডে অনুষ্ঠান প্রচার করার দাবি তোলেন। তারা বলেন, বহির্বিশ্ব থেকে বাংলা ভাষায় প্রচারিত রেডিওগুলো ধীরে ধীরে হারিয়ে যাচ্ছে।

কিন্তু রেডিও তেহরান যেন হারিয়ে না যায়। তারা শ্রোতাদের সঙ্গে সম্পর্ক আরো গভীর করার জন্য রেডিও তেহরানের প্রতি আহ্বান জানান। রেডিও তেহরান শ্রোতাদের যথেষ্ট মূল্যায়ন করে বলে অনেক শ্রোতা উল্লাস প্রকাশ করেন এবং রেডিও তেহরানের ওয়েবসাইটে নির্বাচিত শ্রোতাদের চিঠি প্রকাশ করায় ধন্যবাদ জানান। তারা আরো বলেন, অন্যান্য বিদেশি রেডিওতে যখন শ্রোতাদের নিয়ে কোনো অনুষ্ঠানই প্রচার হয় না সেখানে রেডিও তেহরান এখনও শ্রোতাদের চিঠিপত্র নিয়ে ‘প্রিয়জন’ অনুষ্ঠান প্রচার করায় তারা আনন্দিত।

যখন আন্তর্জাতিক রেডিওগুলোর অনুষ্ঠানের সময় কমিয়ে দেয়া হচ্ছে এবং কোনো কোনো রেডিও বন্ধ হয়ে যাচ্ছে তখন শ্রোতাদের সঙ্গে রেডিও তেহরানের এরকম একটি মিলনমেলায় উপস্থিত হতে পেরে অনেকেই উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেন। তারা প্রতি বছর এমন অনুষ্ঠানের আয়োজন করার অনুরোধ জানান।

অনুষ্ঠানে শুভাকাঙ্ক্ষী হিসেবে বক্তব্য রাখেন ইরান গবেষক, কবি, লেখক ও ব্যাংক কর্মকর্তা আমিন আল আসাদ, ঢাকা মেরীনার ইয়াংস ক্লাবের সাবেক ট্রেজারার এস.এম. নাসিম রেজা মিজান, ইরান গবেষক ও শিক্ষাবিদ আশরাফ উদ্দিন খান এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে আগত এনআরবি এসোসিয়েশন, ইউএসএ’র চেয়ারম্যান জাকারিয়া চৌধুরী।

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন রেডিও তেহরানের সিনিয়র সাংবাদিক মুহাম্মাদ আশরাফুর রহমান এবং সিনিয়র সাংবাদিক ও কথাবার্তা অনুষ্ঠানের বিশ্লেষক মোঃ সিরাজুল ইসলাম। রেডিও তেহরান বাংলা বিভাগের অনুষ্ঠান বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকাসহ বড় শহরগুলোতে এফএম ব্যান্ডের মাধ্যমে প্রচার করার জোর চেষ্টা চলছে বলে শ্রোতাদের একটি আনন্দ বার্তা শোনান আশরাফুর রহমান।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে ঢাকাস্থ ইরান দূতাবাসের হেড অব মিশন আলী পীরি রেডিও তেহরানের শ্রোতাদের এরকম একটি বর্ণাঢ্য মিলনমেলা দেখে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেন।

তিনি ইরানের প্রতি বাংলাদেশের মানুষের আন্তরিকতা ও ভালোবাসায় আবেগাপ্লুত হন এবং দু’দেশের মানুষের মধ্যে সম্পর্কের বন্ধন গভীর করার ক্ষেত্রে রেডিও তেহরানের ভূমিকার ভূয়সী প্রশংসা করেন। বাংলাদেশ ও ইরানের মধ্যে রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও সাংস্কৃতিক সম্পর্ক ও সহযোগিতা উত্তরোত্তর শক্তিশালী হবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন। আলী পিরি অনুষ্ঠানে শ্রোতাদের পক্ষ থেকে উত্থাপিত দাবি-দাওয়া ইরানের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে পৌঁছে দেয়ার প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেন। ইরানের এই কূটনীতিকের বক্তব্য বাংলায় অনুবাদ করেন রেডিও তেহরানের সিনিয়র সাংবাদিক ও সাবেক পরিচালক মোহাম্মাদ মুজাহিদুল ইসলাম।

আশরাফুর রহমানকে বিশেষ অতিথির ক্রেস্ট উপহার দিচ্ছেন আইআরআইবি ফ্যান ক্লাবের কর্মকর্তারা
অনুষ্ঠানের শেষভাগে আইআরআইবি ফ্যান ক্লাব ও রেডিও তেহরানের পক্ষ থেকে অতিথি ও শ্রোতাদের মূল্যবান ক্রেস্ট, সম্মাননা স্মারক, বই ও অন্যান্য উপহার সামগ্রী প্রদান করা হয়। এ সময় আইআরআইবি ফ্যান ক্লাব কিশোরগঞ্জের পক্ষ থেকে আলাদাভাবে আয়োজিত কুইজের পুরস্কার বিতরণ করা হয়।

অনুষ্ঠানের সমাপনী বক্তব্য প্রদান করেন এই বর্ণাঢ্য অনুষ্ঠানের আয়োজক, আইআরআইবি ফ্যান ক্লাবের সভাপতি ও সফল সংগঠক জাকারিয়া চৌধুরী যুবরাজ। দেশের দূর-দূরান্ত থেকে এসে অনুষ্ঠানকে সফল ও উপভোগ্য করার জন্য তিনি উপস্থিত সকলকে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানান।

অনুষ্ঠানের বিভিন্ন অংশ সঞ্চালনা করেন আইআরআইবি ফ্যান ক্লাবের সেক্রেটারি ও রেডিও তেহরানের মনিটর আবু তাহের, রেডিও তেহরানের সিনিয়র শ্রোতা জামাল আহমেদ সুবর্ণ এবং ঢাকাস্থ ইরান সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের চলচ্চিত্র ও জনসংযোগ বিভাগের উপ পরিচালক মোহাম্মাদ সাইদুল ইসলাম। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে ঢাকাস্থ ইরান সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের কালচারাল কাউন্সেলর ড. সাইয়্যেদ হাসান সেহাতের উপস্থিত থাকার কথা থাকলেও বিশেষ কারণে তিনি উপস্থিত থাকতে পারেননি। তবে প্রধান অতিথির সঙ্গে অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ঢাকাস্থ ইরান দূতাবাসের কমার্শিয়াল কাউন্সেলর জনাব ফুলাদবান্দ। পার্সটুডে/

Dhaka Bangladesh

Dhaka Bangladesh

.

:

:

:

: