ঢাকায় ইরানের ইসলামী বিপ্লবের ৪৪ তম বিজয় বার্ষিকী উদযাপন
ইরানের ইসলামি বিপ্লবের ৪৪ তম বিজয় বার্ষিকী উপলক্ষ্যে শনিবার রাজধানী ঢাকায় এক সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়েছে।
ইরানের ইসলামি বিপ্লবের ৪৪ তম বিজয় বার্ষিকী উপলক্ষ্যে শনিবার রাজধানী ঢাকায় এক সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়েছে। সেমিনারে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশে অবস্থিত ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরান দূতাবাসের রাষ্ট্রদূত মানসুর চাভোশি ও সাউথইস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য প্রফেসর ড. এ এন এম মেশকাত উদ্দিন। অনুষ্ঠানে সম্মানিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন গাওসিয়া ইসলামিয়া ফাজিল মাদ্রাসার প্রিন্সিপাল মুফতি মুহাম্মদ ইজহারুল হক। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ঢাকাস্থ ইরান সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের কালচারাল কাউন্সেলর সাইয়্যেদ রেযা মীরমোহাম্মাদী।
অনুষ্ঠানে বাংলাদেশে নিযুক্ত ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরানের রাষ্ট্রদূত মানসুর চাভোশি বলেন, ইরানের ইসলামি বিপ্লবের বিজয়ের মধ্য দিয়ে ইরান ইসলামের মর্যাদা সারা বিশ্বের সামনে সমুন্নত রেখেছে এবং সমগ্র বিশ্বের সকল মুসলিম জাতির জন্য ইসলামকে তাদের মুক্তির বার্তাবাহক হিসেবে উপস্থাপন করেছে। অনুষ্ঠানে সাউথইস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভাইস চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. এ এন এম মেশকাত উদ্দিন বলেন, ইরানের ঐতিহাসিক বিপ্লবের ৪ দশকের সাফল্য আজ বিশ্বের সকল মুসলিম ও স্বাধীনতাকামী জাতির জন্য একটি রোল মডেল। তিনি বলেন, ইরানের ইসলামি বিপ্লব ইরানি জাতির জন্য ফিরিয়ে আনে প্রকৃত স্বাধীনতা, সম্মান ও উন্নয়নের বিরতিহীন অগ্রযাত্রার সেই গৌরবের ধারা। কঠিন অবরোধের মধ্যেও বিশ্বের অনেক দেশের চেয়ে দ্রুত গতিতে সামনের দিকে এগিয়ে চলেছে দেশটি। আর্থ-সামাজিক-রাজনৈতিক এবং সাংস্কৃতিক বিভিন্ন ক্ষেত্রে ইরান বিস্ময়কর অগ্রগতি অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে। আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত বিভিন্ন উন্নয়ন সূচকে শক্তিশালী অবস্থান বলে দিচ্ছে দেশটি কতটা অপ্রতিরোধ্য গতিতে এগিয়ে চলেছে। শিক্ষা, বিজ্ঞান, উদ্ভাবন, প্রযুক্তিগত উন্নয়নসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে এখন নেতৃস্থানীয় দেশের তালিকায় রয়েছে ইরান। তিনি বলেন, আবিষ্কার ও উদ্ভাবনের ক্ষেত্রে বর্তমানে ইরানের অবস্থান বিশ্বে দ্বিতীয়। ন্যানো প্রযুক্তিতে দেশটির অবস্থান বিশ্বে চতুর্থ। সাবমেরিন বা ডুবো জাহাজ শিল্পে ষষ্ঠ, অ্যারোস্পেস, সামরিক ও বেসামরিক বিমান শিল্প, কৃত্রিম উপগ্রহ ও মহাকাশ সংক্রান্ত প্রযুক্তিতে অষ্টম, চিকিৎসা খাতে দশম, কৃষিতে দশম, খেলাধুলায় ১৩তম এবং শিল্প খাতে ইরানের অবস্থান বিশ্বে ১৯তম।
অনুষ্ঠানে গাওসিয়া ইসলামিয়া ফাজিল মাদ্রাসার প্রিন্সিপাল মুফতি মুহাম্মদ ইজহারুল হক বলেন, বর্তমান বিশ্বের সবচেয়ে প্রভাবশালী রাষ্ট্রগুলোর এত প্রতিরোধ ও অসহযোগিতা স্বত্তেও ইরান একটি সমৃদ্ধ ও শক্তিশালী রাষ্ট্র হয়ে উঠেছে একমাত্র ইসলামি বিপ্লবের বিজয়ের কারণে। যদি এই বিপ্লব না হতো, তাহলে ইরান আজকের এই অবস্থানে আসতে পারতো না। মুসলমানদের মধ্যে ঐক্য প্রতিষ্ঠায় ইরান যে প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে তার প্রশংসা করে মুফতি ইজহারুল হক বলেন, আমার কাছে মনে হয়, ইরান একটি অত্যন্ত বড় দায়িত্ব পালন করছে। যার মধ্যে দায়িত্ব পালনের মনোভাব বেশি, মমতা বেশি, তাকেই আমরা সবসময় দায়িত্ব পালন করতে দেখি। যার মধ্যে এই মনোভাব নেই, তিনি কিন্তু এটার প্রয়োজন অনুভব করেন না। তিনি বলেন, ইসলামের শত্রুরা বিশ্বের মুসলিম জাতিগুলোকে দমিয়ে রাখার জন্য যত ধরনের নির্যাতন ও কূটকৌশল প্রয়োগ করছে, একমাত্র ইরান এই সকল প্রতিরোধকে তুচ্ছ করে নিজেরা নিজেদের উন্নততর করতে চেষ্টা করে যাচ্ছে এবং সফল হচ্ছে। এক্ষেত্রে তাদের মূল নিয়ামক শক্তিই হলো ইসলাম।
অনুষ্ঠানে ঢাকাস্থ ইরান সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের কালচারাল কাউন্সেলর সাইয়্যেদ রেযা মীর মোহাম্মাদী বলেন, পশ্চিমাদের শত বাধা সত্বেও ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরান দ্রুতগতিতে সামনের দিকে এগিয়ে চলেছে। কারণ এই বিপ্লবের মূল ভিত্তি ছিল ইসলাম এবং কোরআন, যার আবেদন অবিনশ্বর। দ্বিতীয়ত এই বিপ্লব ছিল জনতার ও গণমানুষের বিপ্লব। তারা স্বেচ্ছায় এই বিপ্লবে অংশ নিয়েছিল। আর তাই এত বাধা ও প্রতিকূলতার মধ্যেও এই বিপ্লবের আবেদন সমগ্র বিশ্বে এতটুকুও কমেনি, বরং আজও তা অত্যন্ত সতেজ ও জীবন্ত।
.