• Aug 17 2025 - 13:12
  • 17
  • : 3 minute(s)

গাজায় সাংবাদিকদের হত্যার নিন্দায় ইরানি বহির্বিশ্ব সম্প্রচার বিভাগ: সত্যের কণ্ঠ নিরব হবে না

ইসলামিক রিপাবলিক অফ ইরান ব্রডকাস্টিং সংস্থার বহির্বিশ্ব শাখা এক বিবৃতিতে গাজায় সাংবাদিকদের তাঁবুতে ইহুদিবাদী সরকারের সাম্প্রতিক সন্ত্রাসী হামলার নিন্দা জানিয়েছেন।

ইসলামিক রিপাবলিক অফ ইরান ব্রডকাস্টিং সংস্থার বহির্বিশ্ব শাখা এক বিবৃতিতে গাজায় সাংবাদিকদের তাঁবুতে ইহুদিবাদী সরকারের সাম্প্রতিক সন্ত্রাসী হামলার নিন্দা জানিয়েছেন।

সোমবার সকালে, ইসরায়েলি শাসকগোষ্ঠীর বাহিনী গাজা শহরের "আশ-শিফা" হাসপাতাল কমপ্লেক্সের প্রধান প্রবেশপথের সামনে সাংবাদিকদের একটি তাঁবুতে হামলা  চালিয়ে যেখানে আল জাজিরার সাংবাদিকসহ ছয়জন ফিলিস্তিনি সাংবাদিক এবং ক্যামেরাম্যানকে হত্যা করেছে।  এই সন্ত্রাসী হামলার প্রতিক্রিয়ায় ইসলামিক রিপাবলিক অফ ইরান ব্রডকাস্টিং সংস্থার বহির্বিশ্ব শাখা এক বিবৃতি দিয়েছে। 

ইসলামী প্রজাতন্ত্র ইরান সম্প্রচার সংস্থার বহির্বিশ্ব দপ্তর গাজার আল-শিফা হাসপাতালের আশেপাশে সাংবাদিকদের তাঁবুতে হামলায় সম্মানিত শহীদ আনাস আল-শরীফ, মোহাম্মদ কারিকা, ইব্রাহিম জহির, মোমিন আলিওয়া, মোহাম্মদ নওফাল এবং মোহাম্মদ আল-খালিদির ওপর ইহুদিবাদী শাসকগোষ্ঠীর নির্দেশিত সন্ত্রাসী হামলার  নৃশংস হত্যাকাণ্ডের তীব্র নিন্দা জানিয়েছে।

বিবৃতিতে বলা হয়েছে এইসব অপরাধমূলক তৎপরতা যা ইসরায়েল ৭ অক্টোবর ২০২৩ সাল থেকে গাজায় গণমাধ্যম কর্মীদের ওপর ধারাবাহিকভাবে অব্যাহত রেখেছে তা কেবল অসহায় মানুষের জীবনের উপর আক্রমণ নয়, বরং সত্য, মত প্রকাশের স্বাধীনতা এবং বিশ্বের মানুষের স্বাধীন সংবাদ ও তথ্য পাওয়ার অধিকার ও রক্তাক্ত গাজা উপত্যকায় ভুয়া ইসরায়েলি সরকারের নির্লজ্জ ও নজিরবিহীন অপরাধের শিকার হওয়া মানুষের কণ্ঠস্বর শোনার মৌলিক অধিকারের উপরও আক্রমণ।

আন্তর্জাতিক আইন, বিশেষ করে জেনেভা কনভেনশন এবং এর অতিরিক্ত প্রোটোকল (১৯৭৭) এর ভিত্তিতে সাংবাদিকরা বেসামরিক নাগরিক হিসেবে স্বীকৃত এবং সশস্ত্র সংঘাতের ক্ষেত্রে পরিপূর্ণ নিরাপত্তা পাওয়ার অধিকার রাখেন। 

সাংবাদিকদের ওপর হামলা "যুদ্ধাপরাধের" একটি স্পষ্ট দৃষ্টান্ত যা আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের (ICC) সংবিধির ৮ অনুচ্ছেদের অধীনে বিচারযোগ্য এবং শাস্তিযোগ্য। অথচ ইহুদিবাদী দখলদার সন্ত্রাসী গোষ্ঠী পশ্চিমা শক্তিগুলোর অবৈধ দায়মুক্তির ছায়ায় ও রাজনৈতিক সমর্থন নিয়ে বছরের পর বছর ধরে সাংবাদিকদের শারীরিকভাবে নির্মূল করার নীতি অব্যাহত রেখেছে। এভাবে ইসরায়েল কার্যত আন্তর্জাতিক মানবিক আইনের সমস্ত ধারা ও রীতিকে পদদলিত করছে; একইসাথে ইসরায়েল সাংবাদিকদের ওপর গত রাতের এসব নৃশংস হামলার বিষয়টি নির্লজ্জভাবে স্বীকার করেছে।

আইআরআইবির বহির্বিশ্ব বিভাগের সচিবালয় জোর দিয়ে বলেছে যে সাংবাদিকদের লক্ষ্যবস্তু করা মানবাধিকারের সার্বজনীন ঘোষণাপত্রের ১৯ অনুচ্ছেদ এবং নাগরিক ও রাজনৈতিক অধিকার সম্পর্কিত আন্তর্জাতিক চুক্তির ১৯ অনুচ্ছেদের গুরুতর লঙ্ঘন এবং এই পদক্ষেপ জাতিগুলির তথ্য অধিকারের উপর সরাসরি আক্রমণ। 

বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, আজকের বিশ্বে আগের যেকোনো সময়ের চেয়েও বেশি সাহসের সাথে সত্য প্রকাশকারী সাংবাদিকদের মুখাপেক্ষী। তাই তাদের কণ্ঠস্বরকে দমন করার যেকোনো প্রচেষ্টা স্বাধীনতা ও ন্যায়বিচারেরই বিরোধিতা।

আমরা জাতিসংঘ, মানবাধিকার পরিষদ, আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত এবং সাংবাদিকদের অধিকার রক্ষাকারী সংস্থাগুলোকে দৃঢ়তার সাথে ও দ্বিমুখিতা ছাড়াই এই অপরাধের তদন্ত করার এবং এই অপরাধের ঘটকদের ও নির্দেশদাতাদেরকেও বিচারের আওতায় আনার আহ্বান জানাচ্ছি।

আমরা বিশ্বের সকল মুক্ত গণমাধ্যমকে এই ভয়াবহ ঘটনার মুখে নীরব না থাকার এবং সংহতি ও ঐক্য বজায় রেখে ফিলিস্তিনি সাংবাদিকদের রক্তকে বিস্মৃত হতে না দেয়ার আহ্বান জানাচ্ছি।

ইসলামী প্রজাতন্ত্র ইরানের রেডিও ও টেলিভিশনের বহির্বিশ্ব বিভাগীয় প্রধানের সচিবালয় সম্প্রতি শহীদ-হওয়া ফিলিস্তিনি সাংবাদিকদের আত্মীয়দের প্রতি গভীর সহানুভূতি প্রকাশ করার পাশাপাশি নির্যাতিত গাজার ২৩৮ জন শহীদ সাংবাদিকের পরিবার এবং এর প্রতিরোধী জনগণের প্রতি প্রতিশ্রুতি দিচ্ছে যে তারা সত্য তুলে ধরতে ও ইহুদিবাদী জালিম সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর অপরাধের মাত্রা প্রকাশে যথাসাধ্য চেষ্টা করবে।

বিবৃতির শেষাংশে বলা হয়েছে: সত্যের কণ্ঠস্বর স্তব্ধ করা যাবে না, এবং আনাস আল-শরীফ, মুহাম্মদ কারিকা, ইব্রাহিম জহির, মোমিন আলিওয়া, মুহাম্মদ নওফাল এবং মুহাম্মদ আল-খালিদির রক্ত হৃদয়ে স্বাধীনতা ও স্বাধীনতার শিকড়কে আরও শক্তিশালী করবে।

উল্লেখ্য, কমিটি টু প্রোটেক্ট জার্নালিস্টস (সিপিজে) এবং রিপোর্টার্স উইদাউট বর্ডার্সসহ(আরএসএফ) স্বাধীন আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো বারবার ফিলিস্তিনে সাংবাদিকদের নিহত হওয়ার সংখ্যা নজিরবিহীন হারে বৃদ্ধি সম্পর্কে হুঁশিয়ারি দিয়েছে এবং এইসব অপরাধের নিরপেক্ষ ও তাৎক্ষণিক তদন্তের আহ্বান জানিয়েছে। কিন্তু ন্যায়বিচার পরিচালনায় আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানগুলির অনিচ্ছা ও নিষ্ক্রিয়তা দখলদার শাসকগোষ্ঠীর কাছে এই বার্তা পৌঁছে দিয়েছে যে তারা শাস্তির ভয় ছাড়াই বার বার আইন লঙ্ঘন করতে পারে। # 

পার্সটুডে

Dhaka Bangladesh

Dhaka Bangladesh

.

:

:

:

: