ইসরাইল চায় যুদ্ধের বিস্তৃতি, তাতে সায় নেই আমেরিকার: কামাল খাররাজি
ইরানের সর্বোচ্চ নেতা হযরত আয়াতুল্লাহিল উজমা খামেনেয়ীর উপদেষ্টা এবং পররাষ্ট্র সম্পর্ক বিষয়ক পরিষদের প্রধান কামাল খাররাজি আল আলম টিভি চ্যানেলকে দেয়া সাক্ষাতকারে গাজা পরিস্থিতির নানা দিক তুলে ধরেছেন।
ইরানের সর্বোচ্চ নেতা হযরত আয়াতুল্লাহিল উজমা খামেনেয়ীর উপদেষ্টা এবং পররাষ্ট্র সম্পর্ক বিষয়ক পরিষদের প্রধান কামাল খাররাজি আল আলম টিভি চ্যানেলকে দেয়া সাক্ষাতকারে গাজা পরিস্থিতির নানা দিক তুলে ধরেছেন।
গাজায় ইসরাইলি ধ্বংসযজ্ঞ ও হত্যাকাণ্ডে পাশ্চাত্যের বৃহৎশক্তিগুলোর সমর্থন, হামাসের আল আকসা তুফান অভিযান ঠেকাতে ইসরাইলের ব্যর্থতা, ফিলিস্তিনিদেরকে মিশর ও জর্দানে স্থানান্তরে ইসরাইলি পরিকল্পনা এবং ইসরাইলি আগ্রাসন প্রতিরোধে হামাস যোদ্ধাদের সর্বাত্মক যুদ্ধ প্রস্তুতির ব্যাপারে সাংবাদদিকের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন। কামাল খাররাজি বলেছেন, আমেরিকা ও তার ইউরোপীয় মিত্ররা গাজা যুদ্ধের বিস্তৃতির ব্যাপারে চিন্তিত। যদিও ইহুদিবাদীরা যুদ্ধ সম্প্রসারণে আগ্রহী কিন্তু পাশ্চাত্যেরএই দেশগুলোর কর্মকর্তারা যুদ্ধ সম্প্রসারণ এবং গাজায় প্রবেশের পরিণতির ব্যাপারে ইসরাইলকে বাবার সতর্ক করে আসছেন। এ কারণে পাশ্চাত্যের কর্মকর্তারা বারবার ইসরাইল সফর করে এবং অস্ত্র ও রাজনৈতিক সমর্থন দিয়ে ইসরাইলের ক্ষোভ প্রশমিত করার চেষ্টা করছেন যাতে ইসরাইলের ধ্বংস ঠেকানো যায়।
আমেরিকা সরাসরি সংঘাতে জড়াতে প্রস্তুত কিনা এমন প্রশ্নের উত্তরে কামাল খাররাজি বলেছেন, বিষয়টি পরিস্থিতির ওপর নির্ভর করবে। যুদ্ধ সম্প্রসারিত হলে হয়তো তাদের নীতিতে পরিবর্তন আসবে কিন্তু বর্তমানে ইসরাইলের মিত্রদের কর্মকাণ্ড দেখে মনে হচ্ছে যেকোনো উপায়ে তারা যুদ্ধ যাতে ছড়িয়ে না পড়ে সে চেষ্টাই করছে। বিশেষ করে একদিকে আমেরিকা ইউক্রেন সংকটে জড়িয়ে আছে অন্যদিকে সামনে রয়েছে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন। এ কারণে মার্কিন সরকার বড় ধরনের যুদ্ধে জড়াতে ইসরাইলকে উৎসাহ দিচ্ছে না। তাই ইসরাইলের বিরুদ্ধে রাশিয়ার উত্থাপিত প্রস্তাবে ভেটো দিয়ে নিরাপত্তা পরিষদসহ আন্তর্জাতিক ফোরামে ইসরাইলকে রক্ষার জন্য সর্বাত্মক চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে আমেরিকা। কিন্তু তারপরও সরাসরি যুদ্ধে তারা জড়াতে চায় না।
ইসরাইল একাই গাজা উপত্যকায় স্থল হামলা চালাতে পারবে কিনা এমন এক প্রশ্নের উত্তরে খাররাজি বলেছেন, ইসরাইল এ ব্যাপারে চরম দ্বিধাদ্বন্দ্বের মধ্যে রয়েছে। কারণ আমেরিকাসহ পশ্চিমা মিত্ররা এবং ইসরাইলের সেনা কমাণ্ডাররা এ পদক্ষেপের পরিণতির ব্যাপারে ভালোভাবেই অবহিত আছে। এ কারণে তারা সাহস করছে না। আমেরিকা ইসরাইলকে সতর্ক করে বলেছে, স্থল অভিযান চালালে ইসরাইল মারাত্মক ভুল করবে। কারণ হামাস যোদ্ধারা টানেলের মধ্যে থেকে যুদ্ধ করছে এবং যে কোনো দিক দিয়ে বেরিয়ে তারা হামলা চালাতে পারে।
ইরানকে মার্কিন প্রেসিডেন্ট বাইডেনের দেয়া পরোক্ষ বার্তায় ইরানের জবাব প্রসঙ্গে কামাল খাররাজি বলেছেন, এই বার্তার মূল অর্থ হচ্ছে এ অঞ্চলে যুদ্ধ সম্প্রসারণের ব্যাপারে আমেরিকা চিন্তিত রয়েছে, তাই আমাদেরও উত্তর হচ্ছে তাদের উচিত ইসরাইলের আগ্রাসন ঠেকানো। তাই এখনই যুদ্ধবিরতি হওয়া উচিত যাতে এর বিস্তার ঠেকানো যায়। তিনি বলেন, যেভাবে সারা বিশ্বের দেশগুলোর জনগণ ইসরাইলের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ করছে তাতে মার্কিন সরকার ইসরাইল ইস্যুতে পিছিয়ে আসতে বাধ্য হবে।
ইসরাইল গাজার প্রতিরোধ যোদ্ধাদের নির্মূল করতে পারবে কিনা এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, এটা কোনোভাবে সম্ভব নয় বরং ফিলিস্তিনের ইসলামি প্রতিরোধ যোদ্ধারা দিনকে দিন শক্তিশালী হয়ে উঠছে। ইসরাইল যতই যুদ্ধ জিইয়ে রাখুক না কেন ফিলিস্তিনিরা তা মোকাবেলা করতে প্রস্তুত রয়েছে।#
পার্সটুডে
.