• Sep 4 2023 - 06:03
  • 47
  • : 2 minute(s)

ইরান-ইরাকের শালামচেহ-বসরা রেল-সংযোগ প্রকল্পের অশেষ গুরুত্ব

ইসলামী প্রজাতন্ত্র ইরানের খুররামশাহরের শালামচেহ নামক সীমান্তবর্তী এলাকা থেকে ইরাকের বসরাকে সংযুক্ত করার রেলপথ নির্মাণের প্রকল্প বাস্তবায়ন শুরু হয়েছে।

ইসলামী প্রজাতন্ত্র ইরানের খুররামশাহরের শালামচেহ নামক সীমান্তবর্তী এলাকা থেকে ইরাকের বসরাকে সংযুক্ত করার রেলপথ নির্মাণের প্রকল্প বাস্তবায়ন শুরু হয়েছে।

গতকাল (শনিবার) এই প্রকল্প উদ্বোধন করেন ইরানের ভাইস-প্রেসিডেন্ট মোহাম্মাদ মোখবের ও ইরাকের প্রধানমন্ত্রী মোহাম্মাদ শায়া আসসুদানি।আগামী দুই বছরের মধ্যে এই প্রকল্পের কাজ শেষ হবে বলে আশা করা হচ্ছে। কৌশলগত এই রেলপথ ইরান ও ইরাকের মধ্যে গভীর সহযোগিতা এবং অসাধারণ ঐক্যের  প্রতীক হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে।

এই প্রকল্প অর্থাৎ শালামচেহ-বসরা সংযোগ রেলপথ চালু হলে ইরানের যে কোনো শহর থেকে ইরানিরা ইরাকের অন্যতম প্রধান ধর্মীয় শহর কারবালায় সহজেই ভ্রমণ করতে সক্ষম হবেন। এই ভ্রমণ সাশ্রয়ী হওয়া ছাড়াও সবার জন্য বিশেষ করে অসুস্থ ও বয়স্ক ব্যক্তিদের জন্য হবে খুবই নিরাপদ ও আরামদায়ক। এই রেল পথ ব্যবহার করে পবিত্র নাযাফসহ  ইরাকের অন্যান্য ধর্মীয় শহর এবং রাজধানী বাগদাদসহ ইরাকের অন্যান্য শহরেও ভ্রমণ করা সহজ হবে।

 কেবল ইরানি নাগরিকরাই নয় পাকিস্তান, আফগানিস্তান ও আশপাশের অন্যান্য দেশ ও  অঞ্চলের জনগণও এই পথ ব্যবহার করে ইরাকে, এমনকি সিরিয়া ও  বিশেষ ব্যবস্থায় জর্দান, তুরস্ক, লেবানন ও সৌদি আরবেও যেতে পারবেন। অন্যদিকে ইরাক ও আশপাশের দেশের জনগণ এই পথ ব্যবহার করে ইরানের ও আশপাশের দেশগুলোর ধর্মীয় স্থানগুলোসহ নানা অঞ্চল বা শহর সফর করতে পারবেন সহজেই।

মাত্র ৩৬ কিলোমিটার দীর্ঘ এই রেলপথ চালু হলে বছরে দুই লাখ যাত্রীবাহী বাস চলাচলের ভিড় কমে যাবে এবং ইরান ও ইরাকের মধ্যে দেড় কোটি যাত্রীর আসা-যাওয়াও সহজ হবে। এ ছাড়াও দুই দেশের মধ্যে দুই কোটি টন বাণিজ্য পণ্য বহনের সুযোগ আসবে। ফলে ইরাক ও ইরানের অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক, ধর্মীয়, সাংস্কৃতিক ও সামাজিক সম্পর্কও বেশ জোরালো হয়ে উঠবে। আশা করা হচ্ছে এই প্রকল্প চালু হলে ইরান ও ইরাকের বাণিজ্য বিনিময় বেড়ে শিগগিরই তিন হাজার কোটি ডলার সমমূল্যে উন্নীত হবে।

এই রেলপথের সামরিক ও ভূ-কৌশলগত গুরুত্বও অপরিসীম। কারণ শালামচেহ-বসরা'র এই রেলপথের মাধ্যমে ইরান অধিকৃত ফিলিস্তিনসহ ভূমধ্যসাগরীয় অঞ্চলের সঙ্গে যুক্ত হচ্ছে।  এই রেলপথ এশিয়া ও আফ্রিকা মহাদেশের অন্যতম সংযোগ-পথও হয়ে উঠতে পারে, কারণ পূর্ব ভূমধ্যসাগরীয় অঞ্চলের দেশগুলোর সঙ্গে এশিয়া ও আফ্রিকার দেশগুলোর সংযোগ সহজ করতে পারে এই রেলপথ।

ইরান ও ইরাক কয়েক দশক ধরেই এই রেল-সংযোগ পথ চালুর পরিকল্পনা নিয়ে অগ্রসর হতে চেয়েছে। তবে নানা বাধা ও দ্বিপাক্ষিক সমন্বয়ের অভাবে তা এগুতে পারেনি। প্রেসিডেন্ট রায়িসির নেতৃত্বাধীন ইরানের বর্তমান সরকার ও ইরাকের শায়া আস সুদানির নেতৃত্বাধীন ক্ষমতাসীন সরকারই এ ব্যাপারে সবচেয়ে জোরালো ইচ্ছা দেখাতে সক্ষম হলেন। এরই মধ্যে সীমান্ত-সংলগ্ন এ অঞ্চল থেকে যুদ্ধের সময় বিছানো অদৃশ্য মাইনগুলোর অপসারণের কাজ শুরু করেছে উভয় দেশ।

আশা করা হচ্ছে এ দুই দেশ ও জাতির শুভ ইচ্ছার কাছে পরাস্ত হবে সব অশুভ বা শয়তানি পরিকল্পনাগুলো। বিশেষ করে ইরাকে মার্কিন প্রভাব ও তৎপরতা ক্রমেই শূন্যে নেমে আসবে বলে এ অঞ্চলের বিপ্লবী ও দেশপ্রেমিক জনগণ আশা করছেন।   #

পার্সটুডে

Dhaka Bangladesh

Dhaka Bangladesh

.

:

:

:

: