এজেন্সি
ইসফাহানের ফিরুজেকুবি বা  ফিরোজা খচিত করা

ইসফাহানের ফিরুজেকুবি বা ফিরোজা খচিত করা

ইসফাহানের ফিরুজেকুবি বা ফিরোজা খচিত করা

ইরানের সবচেয়ে জনপ্রিয় হস্তশিল্পগুলোর মধ্যে একটি,যা একই সাথে আলংকারিক এবং মানানসই তা হলো ‘ফিরুজেকুবি’ বা ফিরোজা খচিত করা। ফিরুজেকুবি হলো ফিরোজা পাথরের ছোট ছোট টুকরো যা মোজাইকের মতো তামা,রুপা,পিতল বা ব্রোঞ্জের তৈরি হাতিয়ার বা পাত্রের উপর স্থাপন করা হয়।

এগুলো পাত্রের সমস্ত অংশে বা কিছু অংশে খচিত করা হয়। ফিরুজেহকুবি একটি নবীন হস্তশিল্প যা মাত্র সত্তর বছর আগে শুরু হয়েছিল। ইউসেফ হাকিমিয়ান প্রথমবারের মতো কানের দুল, ব্রেসলেট, ব্রোচ ইত্যাদির মতো গহনা সাজানোর জন্য এটি আবিষ্কার করেছিলেন। পরে এই শিল্পকর্মটি ইসফাহানে স্থানান্তরিত হয় এবং হজ দাদাশ নামে একজন কারিগর এর অনুশীলন শুরু করেন। আজ ফিরুজেকুবি ইসফাহানের অন্যতম বিখ্যাত স্মারক।

এই কারুশিল্পে ব্যবহৃত ফিরোজা পাথরগুলো পাথরের ওয়ার্কশপ এবং পাথর চূর্ণ করার প্রতিষ্ঠান থেকে সরবরাহ করা হয় যা এটি ছাড়া অন্য কোনো কাজে ব্যবহার করা যায় না। ফিরুজেকুবি তৈরি করতে প্রথমে এর প্রধান উপাদানকে অর্থাৎ পাত্র বা গয়নাকে বেছে নেওয়া হয়। তারপর যে অংশে ফিরোজা লাগানো হবে তার চারপাশ ঝালাই করা হয় এবং প্রায় দুই থেকে তিন মিলিমিটার উচ্চতার একটি পাতলা তার দিয়ে ভাগ করা হয়। যদি উদ্দিষ্ট অংশে প্রয়োগ করার জন্য মোটিফ ও নকশা থাকে, তবে সেগুলোও একই তার দ্বারা আঁকা এবং ঝালাই করা হয়। এই প্রক্রিয়াটি কেবল পণ্যের সৌন্দর্যই বাড়ায় না,এর স্থায়িত্ব এবং টিকে থাকার সক্ষমতাকেও বৃদ্ধি করে। তারপর, ধোয়ার পরে ফিরোজার বড় বা ছোট টুকরাগুলো বাছাই করা হয়।

প্রধান উপাদানটিকে 30 ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড তাপমাত্রায় উত্তপ্ত করা হয়। গরম করার সময় একটি বিশেষ ধরনের গাম পাউডার যার নাম ‘গারদুই’ বা ‘আখরোট বার্নিশ’ যা আঠা হিসাবে কাজ করে,তা বস্তুটির উপর ঢেলে দেওয়া হয় যাতে এটি গলে যায়। তাপর ফিরোজার টুকরাগুলো পৃষ্ঠের উপর দেওয়া হয়। এটি প্রক্রিয়ার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অংশ। উপাদানটি একটি বৃত্তাকার বস্তু হলে,প্রলেপের পুনরাবৃত্তি করতে হয়। খচিত টুকরাগুলোর মধ্যে ফাঁকা জায়গাগুলো পূরণ করতে উপাদানটিকে আরও একবার চল্লিশ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেডে উত্তপ্ত করা হয়, গাম পাউডার ঢেলে দেওয়া হয় এবং খালি জায়গাগুলো ছোট ছোট ফিরোজা পাথর দিয়ে পূর্ণ করা হয়। অবশিষ্ট ফাঁকগুলো যেগুলো পাথর দিয়ে পূরণ করা যাবে না সেগুলো নীল চুন বালির মিশ্রণ দিয়ে পূর্ণ করা হয়। পরবর্তী ধাপে,পৃষ্ঠদেশকে বালিযুক্ত করা হয়। অবশেষে পণ্যটি পালিশ করা হয় এবং একটি চকচকে এবং মসৃণ পৃষ্ঠ প্রাপ্ত হয়। ফিরুজেকুবির কাজ যত বেশি অংশে বিস্তৃত থাকে সেই পণ্যটির মূল্য তত বেশি হয়।

ইসফাহানের ফিরুজেকুবি বা ফিরোজা খচিত করা

:

:

:

: