এজেন্সি
ইরানি ক্যালেন্ডারের ২০ খোরদাদ মোতবেক ১০ জুন বিশ্ব হস্তশিল্প দিবস

ইরানি ক্যালেন্ডারের ২০ খোরদাদ মোতবেক ১০ জুন বিশ্ব হস্তশিল্প দিবস

ইরানি ক্যালেন্ডারের ২০ খোরদাদ মোতবেক ১০ জুন বিশ্ব হস্তশিল্প দিবস
ভারত ও চীনের পর ইরান বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম হস্তশিল্প উৎপাদনকারী দেশ। ১১টি শহর ও ৩টি গ্রাম নিয়ে বিশ্বের নিবন্ধিত হস্তশিল্পের তালিকার শীর্ষে রয়েছে ইরান।

ইসফাহান ১৩০টিরও বেশি শিল্পসহ বিশ্ব হস্তশিল্পের তালিকায় ইরানের প্রথম নিবন্ধিত শহর। ইসফাহান এ কারণে হস্তশিল্পের বিশ্ব শহর হিসাবে নিবন্ধিত হয়েছে যে, বিশ্বের প্রসিদ্ধ ৬০২টি হস্তশিল্পের মধ্যে এবং ইরানের সাথে সম্পর্কিত প্রায় ২৯৯টি হস্তশিল্পের মধ্যে ১৯৯টিই ইসফাহানের।

এই তালিকায় পরে যুক্ত হয় শিরাজ,তাবরিজ ও মাশহাদ। ফার্স প্রদেশে ৮০টি সক্রিয় হস্তশিল্প রয়েছে,যার অধিকাংশই শিরাজে কেন্দ্রীভূত;যেখানে হাতে বোনা কাজের মধ্যে  রয়েছে গেলিম (মাটিতে বিছানোর জন্য এক প্রকার সামগ্রী),জাজিম,গালিচা ও কার্পেট;রয়েছে খাতাম শিরাজ,যা আন্তর্জাতিক ভৌগোলিক নির্দেশক পণ্য হিসেবে স্বীকৃতি লাভ করেছে এবং এই শহরেরই কাঠের কারুকাজ ও হস্তশিল্পের একটি ঐতিহ্যবাহী শিল্প; আরো রয়েছে স্থাপত্যশিল্প, যার মধ্যে রয়েছে সাত রঙের টাইলস,আয়নার কাজ এবং প্লাস্টারিং। তাবরিজ বিশ্ব কার্পেট শহর হিসাবে পরিচিত এবং এই শহরের হাতে বোনা কার্পেট সবচেয়ে সূক্ষ্ম হাতে বোনা কার্পেট হিসেবে বিশ্বের অনেক গ্যালারি ও প্রদর্শনীতে দর্শকদের সামনে প্রদর্শিত হয়ে আসছে।

মাশহাদকে রত্ন পাথরের শহর এবং অলংকারে ব্যবহার্য পাথরের শিল্পকর্মের জন্য হস্তশিল্পের শহর হিসেবে বিবেচনা করা হয়। খোরাসান খনিজ সম্পদের দিক থেকে খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি প্রদেশ। এখানে যেসব খনিজ সম্পদ পাওয়া যায় তার মধ্যে রয়েছে ফিরোজা এবং আকীক,ব্রেইল (অ্যাকোয়ামেরিন),নীলকান্তমণি, রুবি, রুটাইল,অর্থোক্লেস,ফিরোজা,জ্যাসপার,আকীকে সোলাইমানি,ওপাল,গারনেট,স্ফটিকমনি,গোলাপ স্ফটিক,আনদালুসাইট, ইলমেনাইট,আরাগোনাইট ইত্যাদি। এখানে পোরফাইরি ট্র্যাক্টে ফিরোজা পাওয়া যায় এবং বেলেপাথর জৈব পদার্থে (ফসফরাস) সমৃদ্ধ। গুণমান,রঙ এবং মূল্যের দিক থেকে সেরা ফিরোজা পাথর এই প্রদেশের নিশাবুরে পাওয়া যায়।

এই তালিকায় ইরানের অন্যান্য শহরগুলো হলো হামেদানের লালেজিনিস্তান যার নাম মৃৎশিল্পের বিশ্ব শহর। ফারস প্রদেশের আবদেহকে খোদাইকর্মের বিশ্ব শহর হিসাবে নিবন্ধিত করা হয়েছে। ইয়াজদ প্রদেশের মেবোদকে মাটিতে বিছানো চাদরের বিশ্ব শহর হিসাবে নিবন্ধিত করা হয়েছে; কুর্দিস্তান প্রদেশের মারিওয়ানকে কালাশ বা গিভেহ (স্থানীয় এক প্রকার জুতা) বিশ্ব শহর এবং কেরমান প্রদেশের সিরজান শহর গেলিমের বিশ্ব শহর হিসাবে নিবন্ধিত হয়েছে।

শিরিকি পিচ গেলিম (নতুন ও ভিন্ন ধরনের গেলিম)-এর  বিভিন্ন ধরনের বয়নসহ সিরজান বিশ্ব শহর হিসাবে নিবন্ধিত হয়েছে। এই গেলিমগুলো বুনতে একাধিক লোককে একসাথে কাজ করতে হয় এবং অন্যান্য সাধারণ গেলিমের মতো এটি এক ব্যক্তির দ্বারা বোনা হয় না। যানজানকে ট্যাপেস্ট্রির বিশ্ব নগরী হিসেবে নামকরণ করা হয়েছে। যদিও ট্যাপেস্ট্রি ইরানের অন্যান্য অঞ্চলেও করা হয়,তবে যানজানের ট্যাপেস্ট্রি আরও প্রাচীন এবং আসল। মালায়ের আসবাবপত্র ও কাঠখোদাই শিল্পের বিশ্ব শহর হিসেবে নিবন্ধিত হয়েছে এবং এই শহরের মানুষের বিশেষভাবে খোদাই ও নকশাকৃত আসবাবপত্রের অনেক অনুরাগী রয়েছে।

দক্ষিণ খোরাসান প্রদেশের খোরাশাদ গ্রাম যা বিরজান্দ থেকে ২৪ কিলোমিটার পূর্বে অবস্থিত তা তাঁতে বোনা কাপড়ের বিশ্ব পল্লি হিসাবে পরিচিত। এই গ্রামের ঐতিহ্যবাহী তাঁত বয়ন শিল্প ৩০০ বছরেরও বেশি পুরনো। হস্তশিল্পের বিশ্ব তালিকায় আরেকটি ইরানি গ্রাম হলো গিলান প্রদেশের কাসেম আবাদ গ্রাম। এই এলাকাকে বলা হয় হাতে তৈরি রংবেরংয়ের চাদরের বিশ্ব পল্লি। এই চাদর একটি পরিচিতি নির্দেশক পণ্য যা প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে চলে আসেছে  এবং এই অঞ্চলের মানুষের কাছে এটি বিশেষ গুরুত্ব বহন করে।

কালপুরগান গ্রাম সিস্তান এবং বেলুচিস্তান প্রদেশের সারাভান থেকে ২৬ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত এবং এটিকে বিশ্ব মৃৎশিল্প পল্লি বলা হয়। এই গ্রামে ইরানি মৃৎশিল্পের একটি জীবন্ত জাদুঘর রয়েছে এবং পর্যটকরা মৃৎশিল্প তৈরির বিভিন্ন অংশ এখানে দেখতে পারেন।

ইরানি ক্যালেন্ডারের ২০ খোরদাদ মোতবেক ১০ জুন বিশ্ব হস্তশিল্প দিবস

ইসলামিক কালচার অ্যান্ড কমিউনিকেশন অর্গানাইজেশন হল ইরানি সংস্থাগুলির মধ্যে একটি যেটি সংস্কৃতি ও ইসলামিক গাইডেন্স মন্ত্রণালয়ের সাথে অধিভুক্ত; এবং 1995 সালে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল।[আরও]

:

:

:

: