হামাসের হামলা শুধু ইসরাইল নয় মার্কিন প্রভাব খর্ব করতেও ভূমিকা রেখেছে: সর্বোচ্চ নেতা
ইরানের সর্বোচ্চ নেতা হযরত আয়াতুল্লাহিল উজমা খামেনেয়ী, সারাদেশের স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন বাসিজ সদস্যদের সাথে এক বৈঠকে ইসরাইলের বিরুদ্ধে হামাসের আল আকসা তুফান অভিযান এবং ফিলিস্তিন ইস্যুতে কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় তুলে ধরেছেন।
ইরানের সর্বোচ্চ নেতা হযরত আয়াতুল্লাহিল উজমা খামেনেয়ী, সারাদেশের স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন বাসিজ সদস্যদের সাথে এক বৈঠকে ইসরাইলের বিরুদ্ধে হামাসের আল আকসা তুফান অভিযান এবং ফিলিস্তিন ইস্যুতে কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় তুলে ধরেছেন।
পশ্চিম এশীয় অঞ্চলের ঘটনাবলীর ব্যাপারে ইরানের সর্বোচ্চ নেতার বক্তব্যের প্রথম দিকটি হচ্ছে, তিনি এ অঞ্চলের ব্যাপারে ষড়যন্ত্রমূলক পরিকল্পনা বাস্তবায়নে মার্কিন ভূমিকার কথা উল্লেখ করেছেন। মার্কিন পরিকল্পনা অনুযায়ী ইরাক, সিরিয়া, লেবানন, লিবিয়া, সুদান ও সোমালিয়া এই ছয়টি দেশের রাজনৈতিক ব্যবস্থা ভেঙ্গে দিয়ে এসব দেশে নতুন ব্যবস্থা গড়ে তোলা তাদের লক্ষ্য। আমেরিকার আরেকটি বড় লক্ষ্য ছিল বৃহৎ মধ্যপ্রাচ্য পরিকল্পনা বাস্তবায়নের মাধ্যমে ইরান এবং ইরান সমর্থক প্রতিরোধ শক্তির ওপর আঘাত হানা। কিন্তু তাদের এ পরিকল্পনা সম্পূর্ণ ব্যর্থ হয়েছে। মার্কিন সরকার বিপুল অর্থ ব্যয় করেও এ অঞ্চলে তাদের অবস্থান দিনকে দিন দুর্বল হয়ে পড়ছে এবং অন্যদিকে প্রতিরোধ শক্তিগুলোর অবস্থান আগের চেয়ে আরো শক্তিশালী হয়েছে।
ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আরো বলেছেন, আমেরিকা ও ইসরাইল তাদের পরিকল্পনা মতো নতুন মধ্যপ্রাচ্য গঠনের যে নীল নকশা এঁকেছিল আজকের মধ্যপ্রাচ্যের অবস্থা ঠিক তার উল্টো ১৮০ ডিগ্রি ঘুরে গেছে এবং এ ক্ষেত্রে ইরানের বলিষ্ঠ ভূমিকা ছিল। বিশেষ করে শহীদ জেনারেল কাসেম সোলাইমানির অবদান ছিল অসামান্য। এ কারণে সোলাইমানি ইরানের জনগণের কাছে ছিলেন প্রিয় কিন্তু শত্রুদের কাছে ছিলেন বিরক্তিকর। সোলাইমানি এ অঞ্চলের ভূ-রাজনৈতিক পরিস্থিতি প্রতিরোধ শক্তিগুলোর অনুকূলে আমূল পাল্টে দিয়েছিলেন এবং প্রতিরোধ শক্তি এখনো বিজয়ের বেশে রয়েছে।
ইরানের সর্বোচ্চ নেতার বক্তব্যে দ্বিতীয় যে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টি ফুটে উঠেছে তা হচ্ছে, মধ্যপ্রাচ্যের পরিস্থিতি ও জনমত ক্রমেই মার্কিন বিরোধী হয়ে উঠছে। আর এ ক্ষেত্রে সম্প্রতি হামাসের আল আকসা তুফান অভিযানের বিরাট ভূমিকা রয়েছে। আমেরিকা এ অঞ্চলে আধিপত্য বিস্তারের স্বপ্ন দেখেছিল কিন্তু আজ এ অঞ্চলে মার্কিন বিরোধী আবহ সৃষ্টি হয়েছে যা মার্কিন কর্মকর্তাদেরকে দুশ্চিন্তায় ফেলেছে। এ ব্যাপারে ইরানের সর্বোচ্চ নেতা বলেছেন, হামাসের হামলা ইসরাইলের বিরুদ্ধে হলেও এ অঞ্চলে মার্কিন প্রভাব খর্ব করার ক্ষেত্রেও তা ভূমিকা রেখেছে। কারণ এতে করে মধ্যপ্রাচ্যের ব্যাপারে মার্কিন সব পরিকল্পনা ভেস্তে গেছে এবং অচিরেই মধ্যপ্রাচ্য থেকে আমেরিকাকে পাততাড়ি গুটাতে হবে।
ইরানের সর্বোচ্চ নেতার বক্তব্যে তৃতীয় যে দিকটি উঠে এসেছে তা হচ্ছে, অবৈধ রাষ্ট্র ইসরাইলকে অস্বীকার করার প্রবণতা শুরু হয়েছে। শত্রুরা সবসময়ই আরব-অনারব ও শিয়-সুন্নি বিরোধ উস্কে দিয়ে মুসলমানদের মধ্যে বিভাজন সৃষ্টির চেষ্টা চালিয়ে এসেছে যাতে নিশ্চিন্তে এ অঞ্চলের ওপর প্রভুত্ব প্রতিষ্ঠা করা যায়। এ ব্যাপারে ইরানের সর্বোচ্চ নেতা বলেন, কিন্তু তাদের সে কৌশল ব্যর্থ হয়েছে এবং এ অঞ্চলে যে ইসলামি প্রতিরোধ শক্তি গড়ে উঠেছে তারা কখনই মার্কিন বলদর্পিতার কাছে মাথা নত করবে না।#
পার্সটুডে/রেজওয়ান হোসেন
.