গাজায় যুদ্ধাপরাধ করার জন্য ইসরাইলকে দায়ী করুন: জাতিসংঘকে ইরান
অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকার নিরপরাধ বেসামরিক নাগরিকদের বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধ করার জন্য ইহুদিবাদী ইসরাইলকে দায়ী করতে জাতিসংঘের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে ইরান।
অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকার নিরপরাধ বেসামরিক নাগরিকদের বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধ করার জন্য ইহুদিবাদী ইসরাইলকে দায়ী করতে জাতিসংঘের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে ইরান। জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয় হাইকমিশনার ভল্কার তুর্কের কাছে লেখা এক চিঠিতে এ আহ্বান জানিয়েছেন ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হোসেই আমির-আব্দুল্লাহিয়ান।
চিঠিতে তিনি বলেন, ইসরাইল সরকার বর্তমানে ফিলিস্তিনি জনগণের অধিকার ‘চরম ও পদ্ধতিগতভাবে লঙ্ঘন’ করে যাচ্ছে। ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, এর আগে ইসরাইলি পাশবিকতার কোনো বিচার না হওয়ায় তেল আবিব ফিলিস্তিনি জনগণের বিরুদ্ধে আরো বেশি ঔদ্ধত্যপূর্ণ অপরাধ করার সাহস পাচ্ছে।
তিনি বলেন, “গাজায় এখনই ইসরাইলি বিমান হামলা বন্ধ করার ব্যবস্থা নিতে হবে। সেইসঙ্গে মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ ও যুদ্ধাপরাধ করার দায়ে ইসরাইলি নেতাদের বিচার করতে হবে।” আমির-আব্দুল্লাহিয়ান বলেন, গাজা উপত্যকার ওপর ইসরাইলের নির্বিচার বোমাবর্ষণ প্রমাণ করে তারা গাজাবাসীর বিরুদ্ধে ‘পরিকল্পিত গণহত্যা’ চালাচ্ছে।
ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ফিলিস্তিনি জনগণকে জোরপূর্বক ভিটেমাটি ছাড়া করে গাজা উপত্যকায় অনুপ্রবেশ করার যে পরিকল্পনা ইসরাইল হাতে নিয়েছে তার উদ্দেশ্য ‘জাতিগত শুদ্ধি অভিযান’ চালানো যা আন্তর্জাতিক আইনের ভয়াবহ লঙ্ঘন।
গাজার ওপর পাশবিক হামলা চলছে
গাজা উপত্যকার ওপর পাশবিক বিমান হামলার বিরুদ্ধে বিশ্বব্যাপী ব্যাপক প্রতিবাদ বিক্ষোভ সত্ত্বেও গাজায় ইসরাইলি বাহিনীর নির্বিচার বোমাবর্ষণ থেমে নেই। গাজা হামলার ১৯তম দিনে গতকাল (বুধবার) ২৪ ঘণ্টায় সর্বোচ্চ মৃত্যু দেখেছে গাজা। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বুধবার বিকেলে জানায়, তখন থেকে আগের ২৪ ঘণ্টায় গাজায় আরও ৭৫৬ জন প্রাণ হারিয়েছেন। এর মধ্যে ৩৪৪টিই শিশু। ৭ অক্টোবর গাজায় হামলা শুরুর পর এটিই ছিল সবচেয়ে প্রাণঘাতী দিন।
এ নিয়ে গত প্রায় তিন সপ্তাহে গাজায় মোট ৬ হাজার ৫৪৬ জন প্রাণ হারালেন যাদের মধ্যে শিশু ২ হাজার ৭০৪ এবং নারী ১ হাজার ৫৮৪ জন। নিহত ব্যক্তিদের তিন ভাগের দুই ভাগ নারী ও শিশু। সাত শতাধিক শিশুসহ নিখোঁজ দেড় হাজারের বেশি। আহত হয়েছেন অত ১৭ হাজার ৪৩৯।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বলেছে, ইসরাইলি হামলার তীব্রতা দিন দিন বাড়ছে। প্রথমদিকে বিমান হামলায় প্রতিদিন গড়ে ২০০ ফিলিস্তিনি নিহত হচ্ছিলেন। এ সপ্তাহের শুরুতে গড়ে তা বেড়ে দাঁড়ায় ৪০০ জনে। গত দুই দিনে গড়ে ৭ শতাধিক মানুষের মৃত্যু হয়েছে।#
পার্সটুডে
.