ইরানের বিরুদ্ধে ওষুধ নিষেধাজ্ঞা পশ্চিমাদের মানবাধিকার লঙ্ঘনের সুস্পষ্ট দৃষ্টান্ত
ইরানের বিরুদ্ধে অবৈধ নিষেধাজ্ঞার কারণে গত ১ বছরে ৬৬২ থ্যালাসেমিয়া রোগীর মৃত্যু হয়েছে।
ইরানের বিরুদ্ধে অবৈধ নিষেধাজ্ঞার কারণে গত ১ বছরে ৬৬২ থ্যালাসেমিয়া রোগীর মৃত্যু হয়েছে। সোমবার বিশ্ব থ্যালাসেমিয়া দিবস উপলক্ষে ইরানের থ্যালাসেমিয়া রোগীদের সেবা প্রদান সমিতির প্রধান ইউনুস আরব ওই তথ্য দিয়েছেন।
তিনি বলেন থ্যালাসেমিয়া রোগীদের প্রয়োজনীয় ওষুধের শতকরা ৮০ ভাগেরও বেশি দেশেই উত্পাদিত হয়। তারপরও থ্যালাসেমিয়ায় আক্রান্ত কিছু রোগীর চিকিৎসার জন্য নিয়মিত বাইরের ওষুধের প্রয়োজন পড়ে। কিন্তু ওষুধ আমদানির ওপর নিষেধাজ্ঞার কারণে সেইসব ওষুধ আমদানিতে সমস্যায় পড়তে হয়। যার পরিণতি ভোগ করে নিরীহ রোগীরা।
সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ইরানি কর্মকর্তারা বারবার বলে এসেছে মার্কিন একপক্ষীয় অবৈধ নিষেধাজ্ঞার প্রভাবে মানব স্বাস্থ্য ও সুস্থতা বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। বিশেষ করে থ্যালাসেমিয়াসহ বিশেষ কিছু রোগীদের ওপর তার প্রভাব পড়ছে সবচেয়ে বেশি। প্রতিদিনই এ ধরনের রোগী মারা যাচ্ছে বলে ইউনুস আরব জানান।
তিনি এক পরিসংখ্যানে জানিয়েছেন ২০১৮ সালে ৭০ থ্যালাসেমিয়া রোগী মারা গেছে। ২০১৯ সালে মারা গেছে ৯০ জন, ২০২০ সালে ১৪০ জন এবং ২০২১ সালে ১৮০ জন থ্যালাসেমিয়া রোগী মারা গেছে। পরিসনংখ্যান বলছে থ্যালাসেমিয়া রোগীর মৃত্যুর হার ক্রমেই বাড়ছে। মার্কিন নেতৃত্বাধীন পশ্চিমা সরকারগুলো যদিও দাবি করছে যে নিষেধাজ্ঞার তালিকায় ওষুধ অন্তর্ভুক্ত নয় কিন্তু বাস্তবে ব্যাংকিং লেনদেনের ওপর নিষেধাজ্ঞার ফলে বিশেষ রোগীদের ওষুধ আমদানি বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। এই নিষ্ঠুর নিষেধাজ্ঞার শিকার হচ্ছে হাজার হাজার থ্যালাসেমিয়া রোগী, ক্যন্সারের রোগী, এপিডার্মোলাইসিস বুলোসাসহ আরও বহু ধরনের দুরারোগ্য রোগে আক্রান্ত রোগী।
জাতিসংঘের মানবাধিকার পরিষদের বিশেষজ্ঞরাও ইরানে থ্যালাসেমিয়া রোগীদের নিয়ে গবেষণা করে জানতে পেরেছেন মার্কিন নিষেধাজ্ঞার কারণে এইসব দুরারোগ্য রোগীর প্রয়োজনীয় ওষুধ আমদানিতে সমস্যা হচ্ছে। জাতিসংঘের বিশেষ প্রতিবেদক আলেনা দোহান বলেছেন: স্বাস্থ্য অধিকার প্রশ্নে ইরানের রোগীদের ওপর নিষেধাজ্ঞার কুপ্রভাব অস্বীকার করার সুযোগ নেই।
ইরানের খাদ্য ও ওষুধ সংস্থার প্রধান সাইয়্যেদ হায়দার মোহাম্মাদি এ প্রসঙ্গে বলেন: নিষেধাজ্ঞা প্রদানকারী সংস্থার প্রতিনিধিরা বলে: আমরা নিষেধাজ্ঞা দিই না, তবে ওষুদের অর্ডারগুলো উত্তর ছাড়াই রেখে দেওয়া হয়। কয়েক মাস পর তারা সীমিত পরিমাণে ওষুধ সরবরাহ করে। প্রকৃতপক্ষে কোম্পানিগুলো সমস্যায় পড়ার আশঙ্কায় সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে পারে না।
একতরফা অবৈধ নিষেধাজ্ঞা আমেরিকার মানবাধিকার বিরোধী আচরণের আরেকটি উদাহরণ।#
পার্সটুডে
.