• Dec 26 2023 - 09:29
  • 36
  • : 2 minute(s)

মধ্যপ্রাচ্যে আমাদের কোনো প্রক্সি বাহিনী নেই: ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী

ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হোসেইন আমির আবদুল্লাহিয়ান পশ্চিম এশীয় অঞ্চলে ইরানের কোনো প্রক্সি বাহিনী নেই জানিয়ে বলেছেন যে, ইসরাইলি জাহাজগুলোতে ইয়েমেনিদের হামলায় ইরানের কোনো হাত নেই।

ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হোসেইন আমির আবদুল্লাহিয়ান পশ্চিম এশীয় অঞ্চলে ইরানের কোনো প্রক্সি বাহিনী নেই জানিয়ে বলেছেন যে, ইসরাইলি জাহাজগুলোতে ইয়েমেনিদের হামলায় ইরানের কোনো হাত নেই।

সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে, ইসরাইলি জাহাজে কিংবা ইসরাইল অভিমুখী অন্য দেশের জাহাজে ইয়েমেনিদের হামলার ঘটনা আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমগুলোর প্রধান শিরোনাম হয়ে উঠেছে যেটাকে মোকাবেলা করা ইসরাইলের সমর্থকদের জন্য অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ কাজ হয়ে দাঁড়িয়েছে। কেননা যুক্তরাষ্ট্র ইসরাইলের প্রতি সমর্থন দেয়া অব্যাহত রেখেছে এবং এটাও জানিয়েছে যে তারা ইসরাইলের স্বার্থ রক্ষায় কয়েকটি দেশের অংশগ্রহণে লোহিত সাগরে একটি যৌথ টাস্ক ফোর্স গঠন করবে। এছাড়াও, মার্কিন সরকার এমনও দাবি করেছে যে ইসরাইলি জাহাজে ইয়েমেনিদের হামলার সাথে ইরান জড়িত। তাদের আরো দাবি, ইয়েমেনিরা ইরানের পক্ষ হয়ে ইসরাইলি জাহাজে হামলা চালাচ্ছে।

ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রী হোসেইন আমির আবদুল্লাহিয়ান তেহরানে অনুষ্ঠিত ফিলিস্তিন বিষয়ক আন্তর্জাতিক সম্মেলন শেষে মার্কিন কর্মকর্তাদের এসব অভিযোগের জবাব দেন সাংবাদিকদের কাছে । আমির আবদুল্লাহিয়ানের বক্তব্যের প্রথম বিষয়টি ছিল বৈদেশিক নীতিসহ যেকোনো বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণে ইয়েমেনিদের নিজস্ব স্বাধীনতা রয়েছে এবং এ অঞ্চলে ইরানের কোনো প্রক্সি বাহিনী নেই। তিনি আরো বলেন, আমেরিকা যেসব সশস্ত্র গ্রুপকে ইরানের প্রক্সি বাহিনী বলে দাবি করছে প্রকৃতপক্ষে এরা নিজেদের জাতীয় নিরাপত্তা, স্বাধীনতা এবং দেশের জাতীয় স্বার্থ ও আঞ্চলিক নিরাপত্তা রক্ষায় কাজ করছে।

পর্যবেক্ষকরা বলছেন, ইরানের গুরুত্বপূর্ণ নীতি হচ্ছে তারা কখনো বেসরকারী এবং সরকারী মিত্রদের সিদ্ধান্ত গ্রহণে হস্তক্ষেপ করে না এবং বিশেষ করে ইয়েমেনের জনপ্রিয় হুথি আনসারুল্লাহ সমর্থিত ন্যাশনাল স্যালভেশন সরকারের স্বাধীনতায় বিশ্বাসী।

ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর বক্তব্যের দ্বিতীয় গুরুত্বপূর্ণ  বিষয়টি হচ্ছে, সৌদি আরবের সাথে ৮ বছরের যুদ্ধের সময় অর্জিত অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে ইয়েমেনিরা তাদের সামরিক শক্তিকে এমন পর্যায়ে নিয়ে গেছে যে এখন তারা নিজেরা প্রয়োজনীয় সামরিক সরঞ্জাম তৈরি করতে সক্ষম। ইয়েমেন ৮ বছর ধরে সৌদি আরবের আগ্রাসনের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়ায় সামরিক জ্ঞান অর্জন এবং প্রতিরোধ ক্ষমতার উন্নতি করতে সক্ষম হয়েছে। এ কারণেই ইয়েমেনযুদ্ধের চোরাবালি থেকে বেরিয়ে আসার জন্য সৌদি আরব ব্যাপক চেষ্টা চালিয়েছিল।  ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রীও বলেছেন, "ইয়েমেনিদের নিজেদেরই উচ্চমানের সামরিক সক্ষমতা রয়েছে, তাদের উন্নত ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন রয়েছে এবং তাদের শক্তিশালী অন্যান্য সামরিক সরঞ্জাম রয়েছে।"

ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর বক্তব্যের তৃতীয় গুরুত্বপূর্ণ দিকটি হচ্ছে, ইয়েমেনকে ঠেকাতে লোহিত সাগরে বহুজাতিক টাস্ক ফোর্স গঠনে আমেরিকার পদক্ষেপের সমালোচনা করেছেন তিনি। গাজায় ফিলিস্তিনিদের বিরুদ্ধে ইসরাইলি বর্বর আগ্রাসনের প্রতি মার্কিন সরকার সর্বাত্মক সমর্থন দিয়ে আসছে। যুক্তরাষ্ট্রের দাবী হচ্ছে, ইয়েমেনিদের কর্মকাণ্ডে ইসরাইলের নিরাপত্তা হুমকির মুখে পড়েছে এবং এ কারণেই তারা টাস্ক ফোর্স গঠন করতে চাইছে যাতে ইসরাইলের নিরাপত্তা বৃদ্ধি পায়। কিন্তু ইয়েমেনিরা বলেছে, গাজায় ইসরাইলি হামলা বন্ধ না হলে লোহিত সাগরে ইসরাইলি জাহাজে তাদের হামলা অব্যাহত থাকবে।

টাস্ক ফোর্স গঠনে মার্কিন পদক্ষেপের তীব্র সমালোচনা করে ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী দুটি বিষয় উল্লেখ করেছেন। প্রথমত, যুক্তরাষ্ট্র যদি ইসরাইলকে সমর্থন দেওয়া বন্ধ করে, তাহলে পশ্চিম এশীয় অঞ্চল নিরাপদ হয়ে উঠবে এবং সেখানে কোনো জোটের প্রয়োজন নেই। আর দ্বিতীয়ত, লোহিত সাগরে ইয়েমেন বিরোধী জোট তৈরি করা কোনো সমাধান নয়, বরং আসল সমাধান হল গাজা ও ফিলিস্তিনের পশ্চিম তীরে নারী, শিশু ও বেসামরিক নাগরিকদের ওপর হত্যাযজ্ঞ বন্ধ করা।#

পার্সটুডে

Dhaka Bangladesh

Dhaka Bangladesh

:

:

:

: